হামাসের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান নেতানিয়াহুর

বুধবার তেল আভিভে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। সেখানে যুদ্ধ-বিরতি নিয়ে হামাসের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। নেতানিয়াহু এককথায় সেই প্রতিক্রিয়া উড়িয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ, হামাস যা চেয়েছে তা অবান্তর বলে দাবি করেছেন তিনি। বরং তিনি বলেছেন, গাজা স্ট্রিপে ইসরায়েলের সেনা যে অভিযান চালাচ্ছে, তা অনেকটাই এগিয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ জয় নিশ্চিত।

নেতানিয়াহু হামাসের প্রতিক্রিয়া নাকচ করে দেওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। বস্তুত, কাতার হয়ে তেল আবিবে ঢুকেছেন তিনি। এর আগে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, যুদ্ধ-বিরতি নিয়ে আশাবাদী। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ইসরায়েল এদিন বিষয়টি নাকচ করে দিলেও আলোচনা চলবে। কোনো না কোনো পথ খুঁজে বার করা হবে। শুধু তা-ই নয়, গাজায় আরো বেশি সাহায্য পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

তার বক্তব্য, শুধু একটি পথে নয়, অন্য পথেও সাহায্য ঢোকানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখন কেবলমাত্র রাফা সীমান্ত দিয়েই গাজায় সাহায্য ঢুকছে। ব্লিংকেন এদিন আর কোন রাস্তার কথা বলেছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ব্লিংকেন এদিন জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুকে তিনি আবার জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে খুব বেশি বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। এই সংখ্যা কমানো অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেছেন যে, হামাস ইসরায়েলের উপর যে আক্রমণ চালিয়েছিল, তাতে ইসরায়েল হামাসকে তাদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আমেরিকা তা সমর্থন করে।

নেতানিয়াহুর পাশাপাশি ইসরায়েলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও এদিন বৈঠক করেছেন ব্লিংকেন। সেখানেও তিনি বলেছেন, সংঘর্ষ-বিরতির খসড়া নিয়ে আরো অনেক কাজ করতে হবে। সবপক্ষকে একটি আপসের জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। এখনো পর্যন্ত কোনোপক্ষই নিজেদের জায়গা থেকে সরতে রাজি হয়নি।

এদিকে ইসরায়েলের সেনা জানিয়েছে, হামাসের সুড়ঙ্গে ১২ জন পণবন্দিকে তারা দেখতে পেয়েছে। ইসরায়েলের সেনার বক্তব্য, দক্ষিণ গাজার ব্যস্ত শহর খান ইউনিসের ঠিক মাঝখানে ওই সুড়ঙ্গটি তৈরি। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সুড়ঙ্গে অন্তত ১৬টি ঘর আছে। টয়লেট আছে, অফিস আছে এবং কয়েকটি লোহার দরজা লাগানো আছে। সম্প্রতি এক অভিযানে ওই সুড়ঙ্গটিতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ফলে ঘরগুলি এখন ফাঁকা। ইসরায়েল ওই সুড়ঙ্গের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেনার দাবি ১২ জন বন্দিকে ওই সুড়ঙ্গে রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে দুইজনকে ইতিমধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা ইসরায়েলে ফিরে গেছে। বাকি দশ জনকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এর আগে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, গাজা থেকে হামাসকে সম্পূর্ণ উৎখাত করাই তার লক্ষ্য। হামাসের সমস্ত নেতাকে খতম করতেই অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলের সেনারা। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.