জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে বেঁধে রেখে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় মূল হোতা ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফি। এর আগে শনিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর, সাগর সিদ্দিক ও হাসানুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, ভুক্তভোগীর স্বামী রাতেই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলায় মোস্তাফিজ ও মামুনুর রশীদকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বাকি চারজনের বিরুদ্ধে মারধর ও আসামিদের পালাতে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘মামুন আমাদের বাসায় ভাড়া থাকত। তিনি আমার স্বামীর মাধ্যমে কল দিয়ে আমাকে তার রেখে যাওয়া জিনিসপত্র নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলেন। আমি তার জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে যাই। তখন তিনি আমাদের বাসায় থাকবেন না বলে জানান। এছাড়া তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের মোস্তাফিজের কাছে থাকবে বলেও জানান।’
এরপর মোস্তাফিজ ও মামুন মিলে ভুক্তভোগীর স্বামীকে মীর মশাররফ হোসেন হলে আটকে রাখেন। পরে জামা-কাপড় নিয়ে ওই নারী ক্যাম্পাসে আসলে তার কাছ থেকে সেগুলো নিয়ে কক্ষে রেখে আসতে যান মামুন। ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘পরে আমার স্বামী অন্যদিকে থেকে আসবে বলে আমাকে হলের সামনে থেকে পাশের জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যায়। তার সঙ্গে মোস্তাফিজও ছিল। তখন তারা আমাকে ধর্ষণ করে।’
এ ঘটনায় মোস্তাফিজকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। তবে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলের ফটকে প্রশাসনের লাগানো তালা ভেঙে অভিযুক্তদের হল থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন বলে অভিযোগ উঠেছে ওই হলের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।
জানা যায়, মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর কক্ষে মোস্তাফিজুর রহমান থাকতেন। এ বিষয়ে হলের একাধিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতারা জানান, মোস্তাফিজুরের সঙ্গে মামুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইয়াবার ব্যবসা করতেন। মামুন প্রায়ই হলে যাতায়াত করতেন।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.