বরিশালকে জেতালেন মিরাজ-মালিক

শেষ ওভারে জিততে হলে ১৯ রান প্রয়োজন ছিল ফরচুন বরিশালের। প্রথম বলেই দাসুন শানাকাকে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে সেই সমীকরণ ৫ বলে ১৩ রানে নামিয়ে আনেন মিরাজ। এরপর লো ফুলটসে একরান, পরের দুই বলে এক চার ও এক ছক্কায় ২ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটে বরিশালকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন শোয়েব মালিক।

মাঝারি লক্ষ্যে খেলতে নেমে নাহিদুল ইসলামের করা প্রথম বলেই উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন আহমেদ শেহজাদ। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। পরের বলটি একটু দেখেশুনে খেললেও তৃতীয় বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে চান। চেষ্টাও করেছিলেন তবে বলের লাইনে যেতে পারেননি। অনেকটা বেরিয়ে আসায় বল গ্লাভসবন্দি করে শেহজাদকে স্টাম্পিং করেন এনামুল হক বিজয়। তাতে শূন্য রানেই ফিরতে হয় পাকিস্তানের এই ওপেনারকে। আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ফাহিমের লেংথ বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড উইকেটে হাবিবুর রহমানকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন ১৮ বলে ২০ রান করা তামিম।

দারুণ খেলছিলেন সৌম্য সরকার। তিনিও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফাহিমের ওপর চড়াও হতে গিয়ে লং অনে মোহাম্মদ নাওয়াজকে ক্যাচ দিয়েছেন ২৩ বলে ২৬ রান করা এই ব্যাটার। একপ্রান্ত আগলে রাখা মুশফিকুর রহিম আউট হয়েছেন নাসুম আহমেদের টসড আপ ডেলিভারিতে সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছেন ২৫ বলে ২৭ রান করা মুশফিক।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি শোয়েব মালিককে। তিনি ফাহিমের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে মিরাজকে ক্যাচ দিয়েছেন মাত্র ৪ রান করে। এরপর মেহেদী হাসান ও মালিক বরিশালকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। মিরাজ ১৫ বলে ৩১ ও ২৫ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত ছিলেন মালিক। মাত্র ২৫ বলে ৫৫ রানে তাদের জুটি অবিচ্ছিন্ন ছিল।

এর আগে এই ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ ভালো শুরু পেয়েছিলেন খুলনার অধিনায়ক বিজয়। তবে ১৩ বলে ১২ রান করা খুলনার অধিনায়ককে থিতু হতে দেননি পাকিস্তানি পেসার আকিফ জাভেদ। ফুল লেংথের ডেলিভারিতে প্যাডেল স্কুপ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন তিনি। এরপরর আন আউট হয়ে কাটা পড়েছেন হাবিবুর রহমান সোহান। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২ রান।

ষষ্ঠ ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের করা বলটি ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঠেলে দিয়েই রানের জন্য দৌড়েছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। যদিও সেই বল হাতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের দিকে ছুঁড়ে দেন খালেদ আহমেদ। সঙ্গে সঙ্গেই স্টাম্প ভেঙ্গে দেন মুশফিক। রান আউট হতে হয় সোহানকে। একপ্রান্ত আগলে রাখা ইমন আউট হয়েছেন শোয়েব মালিকের টসড আপ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে। তাতে শেষ হয়েছে ইমনের ২৪ বলে ৩৩ রানের ইনিংসের। পরের বলে তিনি আফিফ হোসেন ধ্রুবকে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ বানিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজের। এদিকে মাহমুদুল হাসান জয়কে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি তাইজুল ইসলাম।

বাঁহাতি এই স্পিনারের বেরিয়ে যাওয়া গুড লেংথ ডেলিভারিতে উইকেট থেকে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে বলেন লাইন মিস করেন ১৩ রান করা জয়। তাতে বল গ্লাভসবন্দি করে সহজেই জয়কে স্টাম্পিং করেন মুশফিকুর রহিম। নিজের পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে দারুণ এক ডেলিভারিতে দাসুন শানাকাকে বোল্ড করেছেন তাইজুল। শেষদিকে প্রতিরোধ গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন নাহিদুল ইসলামও। তিনি মাত্র ৫ রান করে মোহাম্মদ ইমরান জুনিয়রের লেংথ বলে বোল্ড হয়েছেন। শেষ দিকে খুলনার রান বাড়িয়েছেন দুই পাকিস্তানি মোহাম্মদ নাওয়াজ ও ফাহিম আশরাফ। এই দুজনের ব্যাটে ভর করেই লড়াইয়ের পুঁজি নিশ্চিত করে খুলনা। মাত্র ২২ বলে এই দুজনের জুটি ৫০ ছাড়িয়ে যায়। ফাহিম ১৩ বলে ৩২ রানের অপরাজিত ইনিংস ও নাওয়াজ ২৩ বলে ৩৮ করে ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হয়েছেন।

খুলনার হয়ে ৩২ রানের পাশাপাশি ৩ উইকেট নিয়ে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়েও হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে ফাহিম আশরাফকে। এর মধ্যে দিয়ে টানা ৪ ম্যাচে জয়ের পর প্রথম হারের দেখা পেল এনামুল হক বিজয়ের দল। ৬ ম্যাচে এটি বরিশালের তৃতীয় জয়। তারা পয়েন্ট টেবিলে আছে ৫ নম্বরে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.