জয়ে ফিরতে মাশরাফিকে বেছে নিলেন তামিম-মাহমুদউল্লাহরা

রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে বিপিএলের এবারের আসরটা দারুণভাবে শুরু করেছিল ফরচুন বরিশাল। তবে পরের ম্যাচগুলোতে যেন জিততেই পারছিলেন না তারা। ঢাকায় দুই হারের পর সিলেটে এসেও জয়ে ফিরতে পারছিলেন না তামিম ইকবাল। টানা হারের পর অবশেষে জয়ে ফিরেছে বরিশাল। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আহমেদ শেহজাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর বোলারদের নৈপূণ্যে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৪৯ রানে হারিয়েছে তারা। তাতে করে টানা পাঁচ ম্যাচেই হারলো মাশরাফির সিলেট।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। সাত বলে ৯ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ফিরে যান তিনি। মিরাজের বলটি শান্তর ব্যাটের কানায় লেগে মুশফিকুর রহিমের তালুবন্দি হয়। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে ফিরে যান শামসুর রহমান শুভও। মোহাম্মদ ইমরান জুনিয়রকে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে দুনিথ ওয়েলালাগের তালুবন্দি হন শামসুর।

ফেরার আগে ২৩ বলে করেন ২৫ রান। পাঁচ নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি মাশরাফি বিন মুর্তজাও। সিলেটের অধিনায়ক তিন বলে দুই রান করে খালেদ আহমেদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন। ৫২ রান তুলতেই তিন উইকেট হারায় সিলেট। তারপর জাকির হাসান এবং বেনি হাওয়েলের ব্যাটে এগিয়ে যায় সিলেট। ৩৪ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে জাকির বিদায় নিলে ৫৮ রানের এই জুটি ভাঙে।

ইমরান জুনিয়রকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লংঅনে মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন জাকির। এরপরের ওভারে হাওয়েলকে ফিরিয়ে বরিশালকে আবারও ম্যাচে ফেরান মিরাজ। প্রীতম কুমারকে কাভারে ক্যাচ দেয়ার আগে ১৮ বলে ২৪ রান করেন হাওয়েল। পরের ওভারের প্রথম বলেই আরিফুল ইসলামকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন খালেদ। তাতে করে ৩ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায় সিলেট। দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠতে পারেননি রায়ান বার্লও।

আকিফ জাভেদের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে সজোরে খেললেও সীমানার কাছে থাকা আহমেদ শেহজাদের হাতে ধরা পড়তে হয় ১ রান করা জিম্বাবুয়ের এই ব্যাটারকে। একই ওভারে মুশফিকুর রহিমের দারুণ দক্ষতায় রান আউট হয়েছেন নাঈম হাসান। এরপর রেজাউর রহমান রাজা ও রিচার্ড এনগারাভার উইকেট তুলে নিয়ে বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন পেসার ইমরান। এদিন একাই ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ফরচুন বরিশালের। স্কোরবোর্ডে ৩৩ রান তুলতেই দুই উইকেট হারায় তারা। ৮ বলে দুই রান করে নাঈম হাসানের বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হন তামিম ইকবাল। আর পাঁচ বলে এক রান করা প্রীতম কুমারকে ফিরিয়েছেন সিলেটের জিম্বাবুইয়ান রিক্রুট রিচার্ড এনগারাভা। আরেকপাশ দিয়ে অবশ্য রান তুলে যাচ্ছিলেন আহমেদ শেহজাদ।

পাকিস্তানের সাবেক এই ওপেনার হাফ সেঞ্চুরি তোলেন মাত্র ৩০ বলে। সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যান তিনি। অল্প সময়ের মাঝে দুজন মিলে ৫০ রানের জুটি গড়েন। এই জুটি ভাঙেন বেনি হাওয়েল। তার নিচু হওয়া ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। ১৭ বলে তিনটি চারে ২০ রান করে ফিরেন সৌম্য। দলীয় ১০৮ রানে ফিরে যান শেহজাদও।

৪১ বলে নয়টি চার ও একটি ছক্কায় ৬৬ রান করা এই ব্যাটারকে কট এন্ড বোল্ড করে ফেরান হাওয়েল। দলীয় ১৩৪ রানে মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারায় বরিশাল। হাওয়েলকে মিড উইকেটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে নাঈম হাসানের তালুবন্দি হন মুশফিক। প্রথম চেষ্টায় অবশ্য ওভার বাউন্ডারি বাঁচান নাঈম, পরে বাউন্ডারিতে ফিরে এসে ক্যাচ ধরেন তিনি। শেষে মাহমুদউলাহর ঝড়ো ইনিংসে লড়াকু সংগ্রহ পায় বরিশাল। মাত্র ২৩ বলে এ দিন হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান এই ফিনিশার। শেষ পর্যন্ত ২৪ বলে সাতটি চার ও দুটি ছক্কায় ৫৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। সঙ্গী মিরাজ অপরাজিত ছিলেন ৬ বলে ১৫ রান করে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.