ইউনাইটেডে চিকিৎসকদের অবহেলায় মৃত্যুর তালিকা চান হাইকোর্ট

রাজধানীর বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ইউনাইটেড গ্রুপের হাসপতালে চিকিৎসা করাতে এসে গত ১৫ বছরে চিকিৎসকদের অবহেলায় এ পর্যন্ত কত রোগী মারা গেছেন, তার তালিকা জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। আগামী তিন মাসের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এই তালিকা দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আজ রোববার (২৮ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

এর আগে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনার ১৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করে করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে উপপরিচালক (আইন) ডা. পরিমল কুমার পাল এ প্রতিবেদন জমা দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়ান ‌চাইল্ডহুড অ্যাজমা সমস্যায় ভুগছিল। শ্বাসকষ্টের জন্য আয়ানকে মাঝেমধ্যে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দেওয়া লাগতো। সুন্নতে খৎনার অপারেশনের আগে ওয়েটিং রুমে তাকে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়টি চিকিৎসকদের জানানো হয়নি।

প্রতিবেদনের তদন্ত কমিটির মতামত অংশে বলা হয়, শিশু আয়ানের অপারেশনের সময় স্বাভাবিক রক্তপাত হয়েছে বলে ধারণা করা যায়।

শিশু আয়ানের মতো আর কারও যেন মৃত্যু না হয়, এজন্য চার দফা সুপারিশ করেছে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি। সুপারিশগুলো হলো- হাসপাতালে একাধিক অ্যানেসথেসিওলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া। রোগী ও রোগীর আত্মীয় স্বজনকে অ্যানেসথেসিয়া ও অপারেশনের ঝুঁকিগুলো ভালোভাবে অবহিত করা। হাসপাতালে আইসিইউর ব্যবস্থা রাখা। সরকারের অনুমোদনের পরে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা।

এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ইউনাইটেড গ্রুপের হাসপতালে চিকিৎসা করাতে এসে এ পর্যন্ত কত রোগী মারা গেছেন, তা জানাতে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন উচ্চ আদালত। পাশাপাশি শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা সাত দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। একইসঙ্গে দেশের সব সরকার অনুমোদিত ও অনুমোদনহীন হাসপাতাল-ক্লিনিকের তালিকা এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.