আজ অর্থবছরের শেষ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন গভর্নর

দেশের অর্থনীতিতে ডলার সংকটের সঙ্গে নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে ব্যাংকিং খাতের তারল্য সংকট। তারল্য সংকটে ব্যাংক খাত চাপে আছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত রোববার (১৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সভায় মুদ্রানীতির খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে।

মেজবাউল হক বলেন, বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকাল ৩ টায় মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। মুদ্রানীতি ঘোষণার পর বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এদিকে মুদ্রানীতি ঘোষণা উপলক্ষে আজ একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আব্দুর রউফ তালুকদার।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরবৃন্দ, বিএফআইইউ’র প্রধান কর্মকর্তা, প্রধান অর্থনীতিবিদ, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও সহকারী মুখপাত্রগণ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নীতি সুদহার বাড়ানোসহ নানা ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলকি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতিতে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে। নীতি সুদহারসহ ব্যাংক ঋণের সবরকম সুদ আরও বাড়িয়ে সংকোচনমুখী ধারা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার দাবি তৈরি হলেও নতুন মুদ্রানীতিতেও এটি বাজার ভিত্তিক হচ্ছে না। ক্রলিং পেগ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই হবে এবারের মুদ্রানীতির অন্যতম লক্ষ্য। এজন্য চলমান সব ধরনের নীতিতে কিছুটা পরিবর্তন আসবে। মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব সংকোচনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোও চলমান থাকবে বলেও জানা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিলো ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু কোনো মাসেই এই খাতের লক্ষ্য পুরণ করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। এমনকি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের ৫ মাসই প্রবৃদ্ধি ছিলো এক অঙ্কের ঘরে। শুধুমাত্র গত অক্টোবরে প্রবৃদ্ধি বেড়ে ১০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ হয়েছিলো।

জানা যায়, সংকোচন নীতির কারণে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট ও সুদহারের কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ তলানিতে নেমেছে। এমন পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এবারের মুদ্রানীতিতেও সংকোচন নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১০ দশমিক ৯ থেকে ৪০ বেসিসি পয়েন্ট কমিয়ে ১০ দশমিক ৫ ধরা হতে পারে।

অপরদিকে সংকটের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ২ হাজার কোটি ডলারের ঘরে। পাশাপাশি নিট রিজার্ভ বর্তমানে ১৬ বিলিয়ন ডলারের কম।

অর্থসূচক/এমএইচ

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.