দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূল বিএনপি নামে কিংস পার্টি গড়ে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেওয়া সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী ও বিআরটিসির সাবেক চেয়ারম্যান তৈমুর আলম খন্দকারের। তারা দুজনই বিএনপির সাবেক নেতা। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও তারা তৃনমূল বিএনপি নামে নতুন দলের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। স্বপ্ন ছিল বিএনপি ভেঙ্গে প্রচুর নেতা-কর্মী ভাগিয়ে এনে তৃণমূলকে শক্তিশালী করবেন। সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসবেন তারা। তবে তাদের স্বপ্ন নির্বাচনে দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
নির্বাচনে জয়ী হওয়া তো দূরের কথা, সামান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়ে তুলতে পারেননি তারা। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদেরকে টপকে দ্বিতীয় ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। আর শমসের-তৈমুর হয়েছেন তৃতীয়।
তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সিলেট-৬ আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। জয়ী প্রার্থীর পাঁচ ভাগের একভাগ ভোট পেয়ে হয়েছেন তৃতীয়।
সিলেট-৬ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ১৯২টি আর ভোটকক্ষ এক হাজার ৮৯টি। এ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৭২ হাজার ৭৪৯জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৩৭ হাজার ৫০৯ জন ও নারী ভোটার দুই লাখ ৩৫ হাজার ২৩৯ জন।
বেসরকারি ফলাফল অনুসারে, এ আসনে ৫৮ হাজার ১২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৩৮৭ ভোট। অন্যদিকে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী হয়েছেন তৃতীয়। তিনি পেয়েছেন মাত্র ১০ হাজার ৮৫৮ ভোট।
দলের চেয়ারম্যানের মত তৃণমূল মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকারও নির্বাচনে তৃতীয় স্থানের দিকে এগুচ্ছেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন।
সন্ধ্যা ৭টায় প্রাপ্তি বেসরকারি ফলাফল অনুসারে, এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী ২৭ হাজার ৫৫৫ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া কেটলি প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৩৫৬। নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬১৬ জন।
জাতীয় পার্টি ছাড়া দেশের বাকী বড় দলগুলো নির্বাচন বর্জন করলেও তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়। দলটি পরিচিত পায় কিংস পার্টি হিসেবে। এ দলের বেশীরভাগ নেতা-কর্মীকে মূলত বিএনপি থেকে ভাগিয়ে আনা হয়। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পর থেকেই তাদেরকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে তুলে ধরেছে নির্বাচন-বিরোধী দলগুলো। জনগণের একটি বড় অংশের তাছে তারা জাতীয় বেঈমান ও মীরজাফর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
নির্বাচনে জঘন্য ফলাফল করায়, ক্ষমতার কোনো স্বাদ পাওয়ার আর সুযোগ রইল না শমসের-তৈমুরের। বন্ধ হয়ে গেল আগের দলে ফিরে যাওয়ার পথও।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.