হোয়াইটওয়াশ পাকিস্তান, বড় জয়ে ওয়ার্নারের বিদায়

হেজেলউডের শেষ বিকেলের ছোবলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়া পাকিস্তানের পরাজয়টা প্রায় অবধারিতই ছিল। লিড পেলেও সিডনিতে পরাজয়ের প্রহর গুনছিল সফরকারীরা। নিজের বিদায়ী টেস্টে বন্ধু উসমান খাওয়াজার সঙ্গে জুটিটা জমে ওঠেনি ডেভিড ওয়ার্নারের। তবে মার্নাশ ল্যাবুশেনকে সঙ্গে নিয়ে সিডনিতে জয়ের উপাখ্যান খেলার অপেক্ষায় ছিলেন ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ওপেনার। শেষ টেস্টে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার স্বাদটা নিতে পারেননি ওয়ার্নার।

অস্ট্রেলিয়া যখন জয় থেকে মাত্র ১১ রান দূরে তখন সাজিদ খানের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন বাঁহাতি এই ওপেনার। তাতে ৫৭ রানের দারুণ এক ইনিংসে শেষ হলো সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ওয়ার্নারের বর্ণিল এক অধ্যায়। টিভি রিপ্লেতে আউট দেখাতেই মলিন হয়ে যায় ওয়ার্নারের মুখ। পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা সবাই একে একে এগিয়ে এসে অভিবাদন জানালেন তাকে।

ড্রেসিং রুমে ফিরে যাওয়ার পথে হেলমেটে আলতো করে চুমু এঁকে দিলেন ওয়ার্নার। পুরো সিডনির গ্যালারি তখন হাত তালিতে অভিবাদন জানাচ্ছিল ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামা এই ওপেনারকে। দু হাত প্রসারিত করে, উঁচিয়ে সমর্থকদের সেই অভিবাদনের জবাব দিলেন ওয়ার্নার। ভার্চুয়াল উপায়ে মাঠে লেখা উঠলো ‘থ্যাংক ইউ ডেভি’। ওয়ার্নারের বিদায়ের পর স্টিথ স্মিথকে সঙ্গে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ৮ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন ৬২ রান করা ল্যাবুশেন। তাতে তিন ম্যাচের তিনটিতে জিতে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলো স্বাগতিকরা।

জয়ের জন্য ১৩০ রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন খাওয়াজা। অফ স্পিনার সাজিদের অফ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাকফুটে গিয়ে ডিফেন্স করেছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ব্যাটে না হওয়ায় বল আঘাত হাতে খাওয়াজার প্যাডে। পাকিস্তানের ফিল্ডাররা আবেদন করতেই আউট দিয়ে দেন আম্পায়ার।

পরোক্ষণেই অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন খাওয়াজা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে রান করা এই ব্যাটার। আম্পায়ার্স কলের গ্যাঁড়াকলে পড়ে সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ফিরতে হয় রানের খাতা খোলার আগেই। তিনে নামা ল্যাবুশেনকে নিয়ে এরপর ১১৫ রানের জুটি গড়েন ওয়ার্নার। যেখানে নিজের বিদায়ী টেস্টে ৫৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন আরেক ব্যাটার ল্যাবুশেনও। ম্যাচ জয়ের খুব কাছে গিয়ে আউট হয়ে ফিরতে হয় ওয়ার্নারকে। তবে ৪ রান করা স্মিথকে সঙ্গে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত করেন ল্যাবুশেন। ৬৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা ল্যাবুশেন শেষপর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৬২ রানের ইনিংস খেলে। সকালে আগের দিনের ৭ উইকেটে ৬৮ রান নিয়ে খেলতে নামা পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত অল আউট হয় ১১৫ রানে। আগের দিন অপরাজিত থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ান ২৮ এবং আমের জামাল করেছেন ১৮ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হেজেলউড চারটি এবং নাথান লায়ন নিয়েছেন তিনটি উইকেট।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.