বর্তমানে দেশে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। তামাক সেবনের ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায় এবং মুখ গহ্বর, ফুসফুস, খাদ্যনালীসহ প্রায় ২০ ধরনের ক্যানসার হয়।
বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওযার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করেছে। সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এছাড়াও সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে মানুষের জীবনের অধিকার রক্ষণ করা হয়েছে। তামাকের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে ২০১৬ সালের ৩০-৩১ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন’ শীর্ষক সাউথ এশিয়ান স্পিকার’স সামিট এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল করার ঘোষণা দেন।
ইতিমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীরা সারাদেশে ব্যাপক গণযোগাযোগ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রার্থী এবং কর্মীদের পক্ষ থেকে প্রচারণাসহ সাধারণ ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণে বিড়ি- সিগারেটসহ অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য বিতরণ/ব্যবহার অতীতে লক্ষ্য করা গেছে। বিগতসমযের ধারাবাহিকতায় চলমান নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাতেও তামাকপণ্যের ব্যবহার পরিলক্ষিত হলে তা জনস্বাস্থ্যের ক্ষতির পাশাপাশি তরুণদের মধ্যে তামাকপণ্য সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে এবং তামাকের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এই সার্বিক বিবেচনায় তামাকের নেতিবাচক প্রভাব থেকে জনসাধারণের সুরক্ষায় সকল ধরনের তামাকজাত দ্রব্য (সিগারেট, বিড়ি, গুল, জর্দা) নির্বাচনী প্রচারণায় বিতরণ/ব্যবহার না করার জন্য সকল প্রার্থী এবং কর্মীদের প্রতি ১৫টি তামাক বিরোধী সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি সকল প্রার্থীদের রাজনৈতিক অঙ্গিকার হিসাবে যুক্ত করা হলে তা জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী সাফল্য হিসাবে বিবেচিত হবে এবং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে কার্যকর অবদান রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
এই বিবৃতি প্রদানকারী সংগঠনগুলো হচ্ছে প্রজ্ঞা, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, এইড ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, ডরপ, ডাস, মানস, উন্নয়ন সমন্বয়, বিইআর, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি, টিসিআরসি, বিসিসিপি, নারী মৈত্রী এবং স্বাস্থ সুরক্ষা ফাউন্ডেশন।
অর্থসূচক/ এইচএআই



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.