অন্যান্যবারের তুলনায় নিউজিল্যান্ড সিরিজ স্বপ্নের মতোই শেষ করেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে টানা দুটি ম্যাচ হেরে সফর শুরু করেছিল বাংলাদেশ। যদিও সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। তারপর টি-টোয়েন্টি সিরিজ দাপটের সঙ্গেই শুরু করে টাইগাররা।
প্রথম ম্যাচটি পাঁচ উইকেটে জিতে যায় তারা। দ্বিতীয় ম্যাচটি অবশ্য বৃষ্টির জন্য পরিত্যক্ত হয়। তারপর তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আবারও জিতে যায় কিউইরা। এবার কোনও সিরিজ না জিতলেও কিউইদের ডেরায় বাংলাদেশের টানা হারের বীভৎস পারফরম্যান্সে ছেদ পড়েছে।
বাংলাদেশের কোচ বলেন, ‘আপনি যেমন বললেন, সিরিজের শুরুতেই আমরা বলছিলাম আগে কী করেছি। আর আমরা তার চেয়ে ভালো করতে চাই। এদিক থেকে এটা খুব সফল একটা সফর। আমার মনে হয় ক্রিকেটারদের অ্যাটিচিউড দারুণ ছিল। এই তরুণ দলটার কোনো ভয় নেই। তারা মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে চায়। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে শান্তর নেতৃত্ব অসাধারণ ছিল। সে টেকটিক্যালি স্পট অন ছিল। ক্রিকেটারদের সঙ্গে বার্তায় সে খুব পরিষ্কার ছিল। তাদের কাছে কী চায় স্পষ্ট করে বলেছে।’
এবারের সিরিজে ছিলেন না তামিম ইকবাল। ইনজুরি থাকায় সাকিব আল হাসানও ছিলেন না। বিশ্বকাপের পর বিশ্রামে ছিলেন আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সিনিয়ররা না থাকায় ড্রেসিংরুমের পরিবেশ আরও ভালো ছিল বলে মনে করেন হাথুরুসিংহে। তিনি বলেন, ‘যদি আমি কিছু বলি, তাহলে নানা জল্পনা তৈরি হবে সত্যি বলতে। সিনিয়রদের এখানে না থাকায় তাদের অ্যাটিচিউডের কোনো সম্পর্ক নাই। আমার মনে হয় তারা তাদের ক্রিকেটটা উপভোগ করতে চেয়েছে। আমার মনে হয় ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা বেশ ভালো। কারণ তাদের যোগাযোগটা বেশ স্পষ্ট, যেমন আমি বলেছি শান্তর পক্ষ থেকে। তারা জানে তারা যথেষ্ট ভালো প্লেয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য। আমার মনে হয় এজন্য তাদের মনে কোনো ভয় ছিল না’
পুরো সিরিজে দারুণ নেতৃত্ব দেয়া নাজমুল হোসেন শান্তকেও কৃতিত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের হেড কোচ। শান্তকে পরবর্তী অধিনায়ক হিসাবে পেতেও আপত্তি নেই তার, ‘আমার মনে হয় তারা বেশ ভালোভাবেই চিন্তা করবে। অবশ্যই এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত। কিন্তু শান্ত যথেষ্ট প্রমাণ রেখেছে তাকে সিরিয়াসলি নেয়ার।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটে এক বিশাল আক্ষেপ ছিল লেগস্পিনার নিয়ে। রিশাদ যেন সেই আক্ষেপে কিছুটা প্রলেপ মাখিয়ে দিলেন। খুব বড়সড় কোনও পারফরম্যান্স না করলেও বল হাতে নিয়ন্ত্রিত পারফরম্যান্স করেছেন তিনি। প্রথম ওয়ানডেতে ৯.২ ওভারে উইকেটহীন ছিলেন রিশাদ। রান খরচা করেন ৬২। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খেলেননি তিনি। তৃতীয় ম্যাচে কিউইদের ৯৮ রানে অলআউট হওয়ার দিনে তিন ওভারে মাত্র চার রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি।
তারপর টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে তিন ওভারে ২৪ রান দেন রিশাদ। নেন এক উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও তিন ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন তিনি। আর তৃতীয় ম্যাচে দুই ওভারে দেন ১৯ রান।
সিরিজ শেষে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে রিশাদ, আমরা একজন লেগ স্পিনারকে সাদা বলে ক্রিকেটে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। সে তার পরীক্ষায় উতরে গেছে। আমরা ড্রেসিংরুমে আলোচনা করেছিলাম তিন ফরম্যাটেই সম্প্রতি সে আমাদের জন্য অসাধারণ। ৮ মাস আগে সে দলেই ছিল না, কোনো ফরম্যাটেই খেলছিল না। এখন সে সেরা বোলার। পুরো সিরিজজুড়ে যেভাবে বল করেছি, বেশ মুগ্ধ করার মতো। হ্যাঁ, হতাশ। আপনি যেমন জানেন, আমরা সবাই জিততে চাই। এজন্যই খেলাটা খেলি। এক পর্যায়ে আমাদের সুযোগও এসেছিল ম্যাচ জেতার। কিন্তু আমরা যথেষ্ট রান করিনি।’
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.