সংসদে বিরোধী দল কে হবে জানতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দল কে হবে সে বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। তারা বলেছেন, শুধু কি আওয়ামী লীগের লোকজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী? আমরা আমাদের জবাব দিয়েছি। তারা সেটা শুনেছেন। তারা বলার চেয়ে শুনতে আগ্রহী ছিলেন বেশি।

তিনি বলেন, তারা (ইইউ প্রতিনিধি দল) আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। বাংলাদেশের বাস্তবতায় এই নির্বাচনটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচনটা আমাদের করতে হয়েছে। এই নির্বাচনে ২৭টার মত দল আছে, ১৮৯৬ জন প্রার্থী আছে। এসব বিষয় তারা পজিটিভ নিয়েছেন।

ইউরোপ-আমেরিকার আসল মাথাব্যথা ইউক্রেন গাজা নিয়ে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের আসলে মাথাব্যথা ইউক্রেন নিয়ে, গাজা-ইসরাইল-ফিলিস্তিন নিয়ে। কাজেই শক্তিদররা বেশি ঘামাচ্ছেন এসব নিয়ে। কঙ্গোতে একটা ইলেকশন হইছে, কারো সাথে কারো যোগাযোগ নেই। ফলাফল হয়ে গেছে। পাকিস্তানও ভাল ডেমোক্রেসির উদাহরণ এটা কেউ বলবে না।

নির্বাচন অংশগ্রহণ মূলক হচ্ছে কি না এ নিয়ে ইইউর কোন কনসার্ন আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের কোন কনসার্ন নাই। ইলেকশন নিয়ে প্রস্তুতি কি জানতে চেয়েছে। কনসার্ন থাকলেও সেটা তাদের মনে আছে।

স্বতন্ত্রদের সঙ্গে দলীয় কর্মীদের নির্বাচন করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সে অধিকার দেওয়া হয়েছে। যে স্বতন্ত্র ইলেকশন করছে, সে যদি আওয়ামী লীগের হয় তার সঙ্গে অন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাজ করে তাহলে কোন সমস্যা দেখি না। আমরা নতুন এক্সপেরিয়েন্স বিশ্বকে দেখাতে চাচ্ছি। জনমত নিয়ে এটাও ডেমোক্রেসি।

জেলা আওয়ামী লীগের কাউকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষমতা নেই কাউকে বহিষ্কার করার। উপজেলায়ও কারো বহিষ্কারের ক্ষমতা নেই। তারা বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করতে পারে কিন্তু সরাসরি বহিষ্কার করতে পারে না।

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীমকে আওয়ামী লীগ সাপোর্ট দিচ্ছে কি না এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা কাউকে সাপোর্ট দিতে পারি না? দেই তো। কোথাও কোথাও ১৪ দলের নৌকা দিয়েছি। সেখানে আমাদের সাপোর্টের বিষয় তো আছেই।

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নির্বাচনকে ভাগাভাগির নির্বাচন বলছেন এমন প্রশ্নের প্রতিক্রিয়ায় কাদের বলেন, বিএনপি বলবেই ভাগাভাগি। তারা নিজেরাই তো ভুয়া হয়ে গেছে। ভুয়ারা কত কথায় বলবে।

ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে। এনিয়ে আমাদের কোন দুশ্চিন্তা নেই। ইলেকশন নিয়ে আমাদের একটা স্ট্যাটিস্টিক্স আছে। যারে দেখতে নারী তার চলন বাঁকা। এই ইলেকশনে তো তারা নেই। তাই এই ইলেকশনের চলন বাঁকা।

টিআইবিকে নিয়ে করা এক প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, টিআইবি বিএনপির শাখা সংগঠন। বিএনপি যা বলে তারাও তা বলে, টিআইবি যা বলে বিএনপিও তা বলে। আমি টিআইবি ইন্টারন্যাশনালের কথা বলিনি। বাংলাদেশের কথা বলেছি।

এর আগে, বিকেল ৪টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপ-দফতর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.