প্লাস্টিক শিল্পে কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নে কার্যক্রম শুরু করেছে এফআইআরসি

দেশের প্লাস্টিক শিল্পের জন্য দক্ষ কর্মী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (এফআইআরসি)। এ বিষয়ে কৌশল প্রণয়ন এবং তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের স্বার্থে বেসরকারি খাত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) এফআইআরসি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের (এফআইআরসি) চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন।

দেশে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন এবং সার্কুলার ইকোনমির প্রসারে প্লাস্টিক শিল্প ও কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে এফআইআরসি’র চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের প্লাস্টিক শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা যেমন আছে, তেমনই অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অন্যান্য খাতের মতো প্লাস্টিক শিল্পেও দক্ষতা উন্নয়ন, গবেষণা ও উদ্ভাবনে অপর্যাপ্ততা রয়ে গেছে। সরকার, বেসরকারি খাত এবং একাডেমিয়ার সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠা সম্ভব বলে আমি মনে করি।

তথ্য বলছে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রায় ২০৯ মিলিয়ন ডলারের প্লাস্টিক পণ্য সরাসরি রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পের রপ্তানি হয়েছে ৯৫০ মিলিয়ন ডলারের প্লাস্টিক। প্লাস্টিক পণ্যের অভ্যন্তরীণ বাজারও বিশাল, যা ক্রমেই বড় হচ্ছে জানিয়ে মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, জগ, বালতির মত গৃহস্থালি পণ্য থেকে শুরু অটোমোবাইল কিংবা এয়ারক্র্যাফট শিল্পেও প্লাস্টিকের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বাজারে জায়গা করে নিতে হলে ভ্যালু অ্যাডিশন এবং হাই-এন্ড প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জনের বিকল্প নেই।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বায়ক মোঃ আখতার হোসেন বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে বর্তমানে দক্ষতা উন্নয়ন, গবেষণা ও উদ্ভাবন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্লাস্টিক শিল্পের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং গবেষণা ও উদ্ভাবনে এফআইআরসি’র এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার।

এ সময়, শিল্পের অংশীজন এবং একাডেমিয়া কে সঙ্গে নিয়ে প্লাস্টিক খাতের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট সুপারিশমালা তৈরির পরামর্শ দেন মোঃ আখতার হোসেন। শিল্পের বিদ্যমান সমস্যার সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

সমন্বয় সভায় অংশ নিয়ে এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আমিন হেলালী বলেন, শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী তৈরিতে এফআইআরসি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সকল অংশীজনকে নিয়ে সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে অগ্রসর হওয়ার পরামর্শ তার।

এফআইআরসি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই’র্ সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানান, দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে ৬০০০ প্লাস্টিক শিল্প গড়ে উঠেছে। বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিক পণ্য অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদন এবং বাজারজাত হচ্ছে। এই খাতে প্রায় ১৩ লাখ মানুয়ের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই শিল্পের জন্য দক্ষ কর্মী তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্লাস্টিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বিআইপিইটি) প্রতিষ্ঠিত হলেও পাবলিক, প্রাইভেট এবং একাডেমিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধনের ঘাটতি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, সভায় প্লাস্টিক শিল্পে কর্মীদের দক্ষতা বিষয়ে সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ এবং নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের সাথে পৃথক দু’টি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে এফআইআরসি।

অনুষ্ঠানের অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এফআইআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই’র সাবেক সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, এফআইআরসি’র পরিচালকবৃন্দ, এফবিসিসিআই’র বর্তমান ও সাবেক পরিচালকবৃন্দ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিকর্ণ কুমার ঘোষ, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস মেনুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সভাপতি মোঃ শামিম আহমেদ, শিক্ষাবিদ ও পরামর্শক গণ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকবৃন্দ।

 

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.