বাংলাদেশকে বিশাল লক্ষ্য দিল নিউজিল্যান্ড

ইনিংসের দশম ওভারে সৌম্য সরকারের হাতে ব্যক্তিগত ১৮ রানে জীবন পেয়েছিলেন টম লাথাম। তিন দফা বৃষ্টির বাধা পেরিয়ে কিউই অধিনায়ক শেষ পর্যন্ত করলেন ৭৭ বলে ৯২। এরপর বল হাতেও খরুচে ছিলেন সৌম্য। ৬ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৬৩ রান উইকেট পাননি একটিও। সৌম্যর করা ইনিংসের ২৮তম ওভার থেকেই নিউজিল্যান্ড তুলেছে ১৮ রান। সৌম্যর এমন বোলিং যেন বাংলাদেশ দলের পুরো ইনিংসের বোলিংয়ের প্রতিরূপ। দফায় দফায় বৃষ্টির বাধায় পড়া এই ম্যাচে উইল ইয়ংয়ের সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড তুলেছে ২৩৯ রান।

এই ম্যাচে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত। অবশ্য নির্ধারিত সময়ে টস হলেও ম্যাচ মাঠে গড়াতে পারেনি বেরশিক বৃষ্টির কারণে। এর ফলে কাভার দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল উইকেটও। দুই দলের ক্রিকেটারদেরই ড্রেসিং রুমে অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। আম্পায়াররা শুরুতে আধা ঘণ্টা পরই ম্যাচ শুরুর ঘোষণা দিলেও। আবারও বৃষ্টির কারণে কাভার দিয়ে ঢেকে দিতে হয় উইকেট। তবে প্রায় এক ঘণ্টা পর সুখবর দেন আম্পায়াররা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ম্যাচ শুরু হতে চলেছে। তবে ম্যাচ হবে ৪৬ ওভারে। বৃষ্টির কারণে কাটা পড়েছে ৪ ওভার।

শরিফুল ইসলামের করা ইনিংসের প্রথম বলেই ফ্লিক করে চার মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন উইল ইয়ং। যদিও কিউইদের ওপেনিং জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি এই পেসার। চতুর্থ বলেই শরিফুলের করা গুড লেন্থের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রাচিন রবীন্দ্র। এক বলের বিরতির পর শরিফুল আউট করেছেন হেনরি নিকোলসকে। তিনি ক্যাচ দিয়েছেন সেকেন্ড স্লিপে এনামুল হক বিজয়ের হাতে।

৪৬ ওভারের ম্যাচের কারণে প্রথম ওভার নেমে এসেছিল ৯ ওভারে। এর মধ্যে ৫ ওভারই করেছেন শরিফুল। প্রথম ওভারে জোড়া আঘাতের পর তিনি কোনো সাফল্য পাননি পাওয়ার প্লেতে। পাওয়ার প্লের পরই মুস্তাফিজুর রহমানের বলে জীবন পেয়েছেন টম লাথাম। মুস্তাফিজের শর্ট অব লেন্থে কথা বল একটু লাফিয়ে উঠেছিল। সেই বল লাথামের ব্যাট ছুঁয়ে স্লিপে গেলেও হাতের মুঠোর নিতে পারেননি প্রথম স্লিপে থাকা সৌম্য সরকার। বল চলে যায় তার মাথার ওপর দিয়ে। ১৮ রানে জীবন পান লাথাম।

ডানেডিনে আবারও হানা দিয়েছে বৃষ্টি। ১৩.৫ ওভার হওয়ার পর আম্পায়াররা বন্ধ করে দিয়েছেন খেলা। টসের পর এক ঘণ্টারও বেশি সময়ের কারণে কাটা গেছে ৪ ওভার। এই দফায় ওভার কাটা যায় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। দ্বিতীয় দফায় বৃষ্টির কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ৪০ ওভারে। বৃষ্টির পর আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন উইল ইয়ং ও টম লাথাম। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে লং অনের ওপর দিয়ে ইনিংসের প্রথম ছক্কা হাঁকিয়ে নিউজিল্যান্ডের দলীয় একশো পূরণ করেন ইয়াং। খানিক বাদেই মাত্র ৫৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কিউই অধিনায়ক লাথাম। সেই সঙ্গে তিনি পূরণ করেন ১২তম নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪ হাজার রানও। তৃতীয় উইকেটে এই দুজনের জুটি ছাড়িয়েছে একশো।

তৃতীয় দফা বৃষ্টির কারণে প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ ছিল বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে। প্রথম দফায় ৪ ওভার, দ্বিতীয় দফায় ৬ ওভার কাটা যাওয়ার পর তৃতীয় দফায় আরও ১০ ওভার কাটা গেছে। ফলে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি ৩০ ওভারের ম্যাচে রূপান্তরিত হয়েছে। বৃষ্টির পর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর রীতিমতো চড়াও হয়েছিলেন টম লাথাম ও উইল ইয়ং। এই দুজনে তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়েছেন। এই দুজনে যোগ করেছেন ১৭১ রান। এর আগে ২০১৫ সালে মার্টিন গাপটিল ও রস টেলর ১৩১ রান করেছিলেন তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে। লাথাম-ইয়ংয়ের জুটি থামিয়েছেন মিরাজ। তার করা ফুলার লেন্থের বলে ইনসাইড এজ হয়ে প্যাড ছুঁয়ে স্টাম্পে চলে যায় বল। ফলে ৭৭ বলে ৯২ রান করে আউট হতে হয় লাথামকে। ৩টি ছক্কার সঙ্গে লাথাম মেরেছেন ৯টি চারের মারও।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.