বৈঠকে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বাকযুদ্ধ ক্ষুব্ধ ইসরাইলিদের

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধে আন্দোলন হামাসের হাতে ইসরাইলের যেসব ব্যক্তি বন্দি হিসেবে আটক রয়েছে তাদের এখনই মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা।

মঙ্গলবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তারা এই দাবি জানান। বৈঠকে প্রচণ্ড রকমের হট্টগোল, চেঁচামেচি-চিৎকার হয়েছে, এমনকি বৈঠকে অংশ নেয়া অনেকেই নেতানিয়াহুকে গালিগালাজ পর্যন্ত করেছেন। কেউ কেউ বৈঠক শুরুর পরপরই নেতানিয়াহুর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বৈঠক থেকে বেরিয়ে গেছেন।

বৈঠকে অংশ নেয়া লোকজন নেতানিয়াহু সরকারের ওপর হতাশা এবং অনাস্থা প্রকাশ করে বলেছেন, তাদের স্বজনদেরকে ইসরাইল সরকার কিংবা সামরিক বাহিনী জীবিত ফিরিয়ে আনতে পারবে না। গাজা থেকে যেসব ব্যক্তিকে যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের আওতায় জীবিত ফিরিয়ে আনা হয়েছে তা কেবল হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের কারণেই সম্ভব হয়েছে।

বৈঠকে অংশ নেয়া কেউ কেউ বলেছেন, নেতানিয়াহু সরকার গাজার টানেলগুলোর উপর যে বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে তাতে হামাসের হাতে আটক বন্দীদের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে। এসব বন্দীর মৃত্যু হামাসের হাতে নয় বরং ইসরাইলি বোমাবর্ষণের কারণে হবে।

ইসরাইলের হিসাব মতে- গাজায় হামাসের হাতে এখনো ১৩৮ জন বন্দি রয়েছে। এসব বন্দীর বেশিরভাগই ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং যুদ্ধ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হওয়া ছাড়া তাদেরকে মুক্তি দেয়া হবে না বলে হামাস জানিয়েছে।

ড্যানি মিরান নামে এক ব্যক্তি গতকালের বৈঠকে যোগ দেন। তিনি ইসরাইলের চ্যানেল থার্টিনকে বলেন, আমার ছেলে হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে। নেতানিয়াহুর সাথে আজকে যে বৈঠক শুরু হয়েছিল তাই এতটাই বিরক্তিকর করছিল যে, আমি বৈঠকের মধ্যেই সেখান থেকে ওয়াক আউট করেছি। এই বৈঠকের বিস্তারিত আলোচনায় আমি যাইনি কারণ নেতানিয়াহুর কথাবার্তা এবং আচরণ আমার কাছে অত্যন্ত কুৎসিত মনে হয়েছে। সেগুলো ছিল অত্যন্ত লজ্জাকর এবং এলোমেলো। সরকার এই বিষয়ে একটা প্রহসন করছে।

ড্যানি মিরান আরও বলেন, সরকার দাবি করছে বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে তারা এটা করছে, ওটা করছেন কিন্তু বাস্তবতা হলো একজন সিনওয়ারের কারণেই আমাদের লোকজন ইসরাইলে ফিরে এসেছে, নেতানিয়াহুর সরকারের কারণে নয়। আমি প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়েছি এই কারণে যে, নেতানিয়াহু দাবি করছেন- তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তারা কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

জেনিফারের পার্টনার অ্যান্ড্রে এখনো বন্দি। তিনি জানিয়েছেন, ‘বৈঠক ছিল রীতিমতো উত্তেজক। অনেকেই সেখানে চিৎকার করেছেন।’

নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ‘আমি এমন কহিনি শুনেছি, যাতে আমার মন ভেঙে গেছে। আমি ক্ষুধা ও তৃষ্ণার, শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের কাহিনি শুনেছি।’

বৈঠক থেকে বেরিয়ে জেনিফার ম্যাস্টার নামে এক নারী জানান, এই বৈঠক ছিল অত্যন্ত গোলযোগপূর্ণ, বহু মানুষ সেখানে চিৎকার-চেঁচামেচি করেছে। তিনি জানান হামাসের হাতে যে সমস্ত বন্দী রয়েছে তাদের এখনই মুক্তি চাইছেন পরিবারের সদস্যরা। খবর- ডিডাব্লিউ, পার্সটুডে

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.