গত রোববার ভারতে পালিত হয়েছে দীপাবলি উৎসব৷ কিন্তু উত্তরাখণ্ড রাজ্যের ৪০ জন নির্মাণ শ্রমিকের আলোর উৎসব পালন করা হয়নি৷ ভোরের আলো ফোটার আগেই উত্তরকাশী যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের সিল্কিয়ারায় নির্মাণাধীন টানেলে কাজ শুরু করেছিলেন তারা৷ হঠাৎ মাটি ধসে পড়ায় বাইরের পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান, কয়েক ঘণ্টা পর উদ্ধারকর্মীরা কাগজে লেখা বার্তা পাঠিয়ে প্রথমে আশ্বস্ত করেন৷ তারপর থেকে গত আট দিন ধরে চলছে দীপাবলির রাতও আঁধারে কাটাতে বাধ্য হওয়া শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা৷
তবে শ্রমিকরা সুড়ঙ্গের প্রবেশপথ থেকে ২০০ মিটার (৫০০ ফুট) দূরে আটকে পড়ায় মাটি সরিয়ে এগোতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের৷ এখন পর্যন্ত ২৪ মিটার খোঁড়া সম্ভব হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ইতিমধ্যে ক্ষুধার্ত শ্রমিকদের খাবারের ছোট ছোট প্যাকেট সরবরাহ করার পাশাপাশি পাম্প করে ওপর থেকে অক্সিজেনও পাঠাতে শুরু করেছেন৷
ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স-এর সিনিয়র কমান্ডার করমবীর সিং ভান্ডারি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘সুড়ঙে আটকে পড়া ৪০ জন শ্রমিকই নিরাপদ আছেন৷ আমরা তাদের কাছে খাবার এবং পানি পাঠিয়েছি৷’
শুরুতে কাগজে বার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগ করা হলেও উদ্ধারকর্মীরা এখন রেডিও হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন৷ সাড়ে চার কিলোমিটার (২.৭ মাইল) দীর্ঘ সুড়ঙ্গটির যে অংশ ধসে পড়েছে, সেখানে প্রায় ৪০ মিটার মাটি এবং আবর্জনা সরালে আটকে পড়াদের কাছে পৌঁছানো যাবে৷
এদিকে নানা চেষ্টার পর শুক্রবারের পর থেকে উদ্ধারকাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন নতুন কৌশল হাতে নেওয়া হয়েছে। তাদের উদ্ধারে এখন পাঁচটি পরিকল্পনায় জোর দেওয়া হচ্ছে। উদ্ধারকারীরা এতদিন সামনের দিক থেকে সুড়ঙ্গের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন, এবার উপর দিক থেকে খোঁড়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে নতুন একটি রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে যার মাধ্যমে সুড়ঙ্গে পৌঁছানো সহজ হবে।
কারণ শুক্রবার বিকেলে সুড়ঙ্গ খোড়ার সময় বিকট শব্দ কানে আসে। ভিতরের কোথাও কোথাও ধস নামে। তারপর কাজ বন্ধ করে দেয় উদ্ধারকারীরা। তবে শ্রমিকদের নিরাপদে উদ্ধার করে আনতে থাইল্যান্ড এবং নরওয়ের দুটি সংস্থাকে ডেকে পাঠিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। এই মুহূর্তে ১৬৫ জন সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, এপি, এনডিটিভি
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.