ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে এরদোয়ান-শলৎসের ‘দ্বিমত’

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে আলোচনার জন্য গত শুক্রবার বার্লিনে পৌঁছান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। ২০২০ সালের পর এটাই তুর্কি নেতার প্রথম জার্মানি সফর৷ পরে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে প্রশ্ন করা উচিত নয়। অন্যদিকে, এরদোয়ান গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার তীব্র সমালোচনা করেন। হাসপাতালে গুলি ও ‘শিশুহত্যার নিন্দা’ জানিয়েছেন।

জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, এই কারণেই আমাদের আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে কঠিন মুহূর্তে একে অপরের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা প্রয়োজন। জার্মানির জন্য ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকার অখণ্ডণীয়। আমাদের দেশে ইহুদি-বিদ্বেষের কোনো স্থান নেই। তা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ধর্মীয় যাই হোক না কেন, তা ডান বা বাম যে দিক থেকে আসুক না কেন। এখানে ইহুদি-বিদ্বেষের কোনো স্থান নেই।

এরদোয়ান জানান, জার্মানি যদি গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বানে তুরস্ককে সমর্থন করে, তাহলে একটা সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

জার্মানি ও তুরস্কের বিরোধের একটি প্রধান বিষয় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ। একদিকে, এরদোয়ান গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আক্রমণের তীব্র সমালোচনা করেছেন। ইসরায়েলকে যুদ্ধাপরাধী হিসাবে অভিযুক্ত করেছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তাদের আক্রমণের লক্ষ্য হলো ৭ অক্টোবরের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে গাজায় হামাসকে নির্মূল করা।

ইসরায়েল, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ দেশগুলোতে হামাসকে সন্ত্রাসীসংগঠন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

শনিবার শলৎসের সঙ্গে আলোচনার আগে জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টের-স্টাইনমায়ারের সঙ্গে দেখা করেন এরদোয়ান। জার্মান প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র বলেন, আলোচনায় জার্মানির অবস্থানের উপর জোর দেয়া হয়েছে। ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকার এবং আত্মরক্ষার অধিকার-এর কথা তুলে ধরা হয়েছে।

বৈঠকের আগে শলৎস জানান, ন্যাটো সামরিক জোটে সুইডেনের যোগদানের বিষয়টি নিয়েও তাদের কথা হতে পারে।

সুইডেনে আশ্রয় নেওয়া ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ গুলির সদস্যদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছিল তুরস্ক৷ তাই সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদান নিয়ে তাদের আপত্তি ছিল। বিশেষ করে তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর তালিকাভুক্ত কুর্দি পিকেকে সংগঠনের সদস্যদের দমন করার উপর জোর দিয়ে আসছিল দেশটি৷ পরে অবশ্য তুরস্কের সুর নরম হয়।

দুই নেতার বৈঠকে আজ অভিবাসন নিয়েও কথা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ব্লকের বহিরাগত সীমান্তে অভিবাসন রোধের প্রচেষ্টায় একজন প্রধান মিত্র তুরস্ক। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটাই মনে করে।

এ ছাড়া আগামী বছরের শুরুতে তুরস্কের পৌরসভা নির্বাচন রয়েছে। এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি) রাজধানী আঙ্কারা এবং সবচেয়ে জনবহুল শহর ইস্তাম্বুলের আসন পুনরুদ্ধারের আশা করছে। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, ডিপিএ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.