বিশ্বকাপ জিতলে ভালোই লাগবে: রোহিত

এক যুগ পর আবারও বিশ্বকাপ জয়ের দ্বারপ্রান্তে ভারত। তাও আবার ঘরের মাঠে টুর্নামেন্ট জুড়ে অপরাজিত থেকে। গ্রুপ পর্বের ৯টি ম্যাচই ভিন্ন ভিন্ন ৯টি ভেন্যুতে খেলেছে ভারত। রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিরা যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই ম্যাচ বিশ্বকাপ জয়ের প্রেরণা পেয়েছেন।

এক যুগ আগে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে দর্শক হয়ে ছিলেন রোহিত। এবার আরেকটি বিশ্বকাপে ভারতের নেতার আসনে এই ডানহাতি ব্যাটার। যদিও প্রত্যাশার চাপ আছেই সঙ্গে আছে কোটি ভক্তের ভালোবাসাও। এগুলোই ভারতের আরেকটি বিশ্বকাপ জয়ের প্রেরণা।

অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া পয়েন্ট টেবিলে তিন নম্বরে থেকে সেমি ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। গ্রুপ পর্বে টানা দুই হারে তাদের সেমি ফাইনাল খেলার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন অনেকে। এরপর অবশ্য ধারাবাহিক পারফর্ম করেই তারা ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। এবারের বিশ্বকাপে ভারতের তুলনায় অস্ট্রেলিয়াকে এতোটা ভয়ঙ্কর দল মনে নাও হতে পারে। তবে ফাইনালে তাদের মোটেই হালকাভাবে দেখছেন না ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে রোহিত বলেছেন, ‘বিশ্বকাপ জিতলে ভালোই লাগবে। কারণ এর জন্য আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। আমরা রোমাঞ্চিত হতে চাই না, খুব বেশি চাপও অনুভব করতে চাই না। এয়ারপোর্টে সবসময়ই শুনতে হয়েছে আমাকে বিশ্বকাপ জিততে হবে। একে ২০০ রান করতে হবে, ওকে পাঁচ উইকেট নিতে হবে। তাই এমন কথা সবসময়ই কানে বাজে। আমি দেখেছি যে কয়েকজন এর থেকে নিজেকে দূরে রাখতে কানে হেডফোন ব্যবহার করে। তবে এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের যাত্রাটা উপভোগ করেছি, কেবল শেষ কাজটা বাকি।’

অস্ট্রেলিয়া দল এতোটা আক্রমণাত্মক নয় এমন প্রশ্নের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে রোহিত বলেন, ‘দলটা প্রভাব জাগানিয়া নয়, এই কথার সঙ্গে আমি একমত নই। তারা নিজেদের সর্বশেষ ৮ ম্যাচের সবগুলোই জিতেছে। আর ভালোও খেলেছে। তাই (ফাইনালে) প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা দারুণ হবে। দুই দলই ফাইনালে ওঠার যোগ্য এবং আমরা জানি অস্ট্রেলিয়া কী করতে পারে।’

ব্যাট হাতেও এবারের বিশ্বকাপে সেরা ফর্মে আছেন রোহিত। তিনি ১০ ম্যাচে এক সেঞ্চুরি ও তিন হাফ সেঞ্চুরিতে করেছেন ৫৫০ রান। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই ভারতের বিস্ফোরক শুরু এনে দিয়েছেন রোহিতই। সেমি ফাইনালের আগে ভারতের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেছেন রোহিতের ব্যাটিং অন্যদের চাপ কমিয়ে দিচ্ছে। রোহিতও জানিয়েছেন, দলের কথা চিন্তা করে বিশ্বকাপের আগেই এমন ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন তিনি। স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। অবশ্য দলের প্রয়োজনে হাল ধরেও খেলেছেন রোহিত। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০১ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলেছিনে তিনি। সেই ইনিংসও প্রশংসা কুড়িয়েছে।

২০০৩ সালের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। সেবার সৌরভ গাঙ্গুলির দলকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল অজিরা। এরপর অবশ্য ২০১১ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ঠিকই বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। সেই দলে রোহিত অবশ্য জায়গা পাননি। রোহিতের অবশ্য আক্ষেপ না থাকারই কথা। কারণ এক যুগ পর তার হাত ধরেই আরেকটি ফাইনালে নাম লিখিয়েছে ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারলে ভারতের ক্রিকেটে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে রোহিতের নামও। রোহিত অবশ্য ২০১১ এর স্মৃতি মন থেকে ঝেড়ে ফেলে ফাইনালেই মনোযোগ রাখতে চাইছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি গুরুত্বটা জানি। তাই শান্ত ও ফুরফুরে মেজাজে আছি। ২০১১ সালে কী ঘটেছিল কিংবা আগামীকাল (আজ) কী হবে তা ভেবে আবেগপ্রবণ হতে চাই না। এই বিশ্বকাপ শুরুর সময় (দলের ভেতর) যে পরিবেশ তৈরি করেছিলাম (ফাইনালে) সেটারই পুনরাবৃত্তি করতে চাই। সবাই ভালো ফর্মে আছে। এটা ধরে রাখতে চাই। যেটা বলে এসেছি, নিজেদের বড় কিছু মনে করতে চাই না, আবারও ছোটও ভাবতে চাই না। ভারসাম্যটা ধরে রেখে কাজটা ঠিকঠাকমতো করতে চাই।’

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.