‘বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে সার কারখানা’

আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউরিয়া সারের চাহিদা মোটানো ও সুলভ মূল্যে কৃষকদের কাছে সার সরবরাহ নিশ্চিত করবে এই কারখানাটি।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) নির্মিত ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন উপলক্ষ্যে রাজধানীতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।

জাকিয়া সুলতানা বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউরিয়া সারের চাহিদা মোটানো ও সুলভ মূল্যে কৃষকদের কাছে সার সরবরাহ নিশ্চিতকরতে কাজ করবে এই কারখানাটি। পাশাপাশি আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে কারখানাটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব কারখানাটিতে বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হবে। এই মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি ২১ লাখ টাকা (এর মধ্যে জিওবি: ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং বাণিজ্যিক ঋণ ১০ হাজার ৯২০ কোটি টাকা)।

তিনি বলা হয়, ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিল্প মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। তখন তিনি একটি নির্দেশনা প্রদান করেন। নির্দেশনাটি হলো- বিসিআইসি’র বিদ্যমান পুরাতন সার কারখানা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি ও জ্বালানি সাশ্রয়ী সার কারখানা নির্মাণ করতে হবে। পলাশ ও ঘোড়াশাল সার কারখানার পুরাতন যন্ত্রপাতির পরিবর্তে নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপন করে দ্রুত সার কারখানার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তা সেই নির্দেশনার পরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ঘোড়াশাল পলাশ ইঊরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।

এরপর ২০১৮ সালের অক্টোবরে নরসিংদী জেলায় ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০২০ সালে বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাস মহামারি রূপ ধারণ করলে প্রকল্পের ভৌত কাজ সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু বিসিআইসি’র কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টা ও তত্ত্বাবধানে সাধারণ ঠিকাদার ও তাদের সাব-কন্ট্রাক্টরদের মাধ্যমে প্রকল্পের ভৌত কাজ ২০২০ সালের আগস্টে পুরোপুরি শুরু হয়। এরপর দীর্ঘদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন বলে জানানো হয়।

তিনি আরও বলেন, আগামী ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের ইউরিয়া সার উৎপাদন প্রক্রিয়া উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। এটা নরসিংদীসহ গোটা দেশের কৃষকদের জন্য একটি সুখবর। কারখানাটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো সুদৃঢ় করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এই ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানাটিতে কম গ্যাস দিয়ে বেশি সার উৎপাদন করা যাবে। অর্থাৎ পুরাতন দুইটি কারখানায় যে গ্যাস ব্যবহার করা হতো, সেই একই পরিমাণ গ্যাস দিয়েই নবনির্মিত কারখানাটিতে প্রায় তিনগুণ (বার্ষিক ৯ লক্ষ ২৪ হাজার মেট্রিক টন) সার উৎপাদন করা সম্ভব হবে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হলে এবং উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারলে বর্তমানে ৪টি ইউরিয়া সার কারখানা ও নতুন নির্মিত ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার উৎপাদিত ইউরিয়া সার দিয়ে দেশীয় চাহিদা মেটানোসহ আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা যাবে।

অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.