বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। সংকট কাটাতে গত গত বছরের মার্চ থেকে ফেডারেল রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে নীতি সুদহার বাড়াচ্ছে। ফলে দেশটিতে নীতি সুদহার এখন ২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দ্য গার্ডিয়ানের এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সম্প্রতি ফেডারেল রিজার্ভ ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ড উভয়েই জানিয়েছে, নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখা হবে, তার ঠিক পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের পরিসংখ্যান প্রকাশিত হলো। দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার কমে আসা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির গতি হ্রাসের কারণের ফেড ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২২ সালের জুনে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ১ শতাংশ, এখন যা বার্ষিক হিসাবে ৩ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। তা সত্ত্বেও ফেড সন্তুষ্ট নয়, তারা মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রায় নামিয়ে আনতে চায়।
ফেডের চেয়ারম্যান বলেছেন, মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই এখনো চলছে। সে জন্য ভবিষ্যতে নীতি সুদহার আবারও বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের চেয়ারম্যান অ্যান্ড্রু বেইলি বলেছেন, নীতি সুদহার কমানোর সময় হয়নি।
মূলত সমাজে অর্থের প্রবাহ কমানোর জন্য নীতি সুদহার কমানো হয়। অর্থাৎ সমাজে অর্থের প্রবাহ কমলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমবে। এর বিপরীতে চাহিদায় টান পড়বে। এতে জিনিসপত্রের দাম কমে আসবে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, যদিও অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাস ছিল, গত মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দেশটিতে বেকারত্ব ৩ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে উঠেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল সম্প্রতি বলেছেন, মার্কিন অর্থনীতি মন্দা এড়াতে পারবে, অর্থাৎ বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাই না করেই মূল্যস্ফীতির হার কমানো যাবে।
গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৯৭ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সেই মাসে ৩ লাখ ৩৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার পূর্বাভাস থাকলেও শেষমেশ খুব কর্মসংস্থান হয়নি, অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে কর্মসংস্থানের হার ছিল অনেক কম। এ খবরে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার চাঙা হয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, ফেডারেল রিজার্ভ যে মূল্যস্ফীতির হার কমাতে আগ্রাসীভাবে নীতি সুদহার বাড়াচ্ছিল, সেই ধারায় এবার ছেদ পড়বে।
ফেডারেল রিজার্ভের অর্থনীতিবিদেরা এক মাসের কর্মসংস্থানের উপাত্ত থেকে খুব বেশি কিছু ধারণা করতে চান না ঠিক; কিন্তু অক্টোবরের প্রতিবেদনে বোঝা যাচ্ছে, অর্থনীতি মন্দা এড়াতে পারবে। বেকারত্ব ৫০ বছরের মধ্যে প্রায় সর্বনিম্ন ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমেছে, দুই বছর ধরেই তা ৪ শতাংশের নিচে। যদিও অর্থনীতিবিদেরা ধারণা করছিলেন, সাম্প্রতিক অতীতে দেশটিতে যে হারে কর্মসংস্থান হয়েছে, তার গতি কমে আসবে।
অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.