গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস

ইসরাইলের নির্বিচার ও পাশবিক বিমান হামলার শিকার গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তার জন্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিপুল ভোটে একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার পরিষদের অধিবেশনে ওই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়।

সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবটিতে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস ও নির্বিচার হামলাসহ’ সব সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়। একই সঙ্গে প্রস্তাবে বেসামরিক লোকজনের সুরক্ষা ও বাধাহীন ত্রাণসহায়তার আহ্বান জানানো হয়। গৃহীত প্রস্তাবে চলমান সংঘাতের সময় আটক বেসামরিক ব্যক্তিদের ‘অবিলম্বে ও নিঃশর্ত’ মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

আরব দেশগুলোর পক্ষে সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল জর্দান। প্রস্তাবের পক্ষে ইরান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ফ্রান্স ও রাশিয়াসহ ভোট দিয়েছে পরিষদের ১২০ সদস্যদেশ। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে আমেরিকা ও ইসরাইলসহ ১৪ সদস্য। অপরদিকে ৪৫ সদস্য ভোটদানে বিরত ছিল যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশগুলো হলো ভারত, ইরাক, ব্রিটেন, জার্মানি, আলবেনিয়া ও তিউনিশিয়া।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কোনো প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর তা মেনে চলার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এই পরিষদের সদস্য হওয়ায় গৃহীত হওয়া প্রস্তাবগুলোর নৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা না থাকা সত্ত্বেও এবং গাজার অন্তত সাত হাজার মানুষকে হত্যা করার জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের কথা না থাকা সত্ত্বেও প্রস্তাবটি পাশ হওয়ার পর জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত দিনটিকে জাতিসংঘের ইতিহাসে একটি কালো দিন উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি প্রস্তাবে কথিত ‘সন্ত্রাসী হামলার’ জন্য হামাসকে দায়ী না করায় বিশেষ করে প্রস্তাবের কোথাও হামাসের নাম না থাকায় প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে জর্দান এর আগে বলেছে, প্রস্তাবটিকে রাজনৈতিক রঙ দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য এতে হামাসের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এরপর থেকে গাজায় নিরবচ্ছিন্নভাবে বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। একই সঙ্গে উপত্যকাটি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ, পানি, খাবার, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে চরম মানবিক সংকটে রয়েছেন সেখানকার অধিবাসীরা। প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য ত্রাণসহায়তা পাচ্ছেন তারা। গাজায় ইসরাইলের হামলায় শুক্রবার পর্যন্ত ৭ হাজার ৩২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে যাদের ৬৬ শতাংশই নারী ও শিশু। একই সময়ে জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় ১১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অপর দিকে হামাসের হামলায় ইসরাইলে নিহত হয়েছে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি। পার্সটুডে

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.