প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটি ফান্ডের আয়ের ওপর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বেসরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকরিজীবীদের সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ হিউম্যান রিসোর্স অর্গানাইজেশনসের পক্ষ থেকে এনবিআরে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সঞ্চয় একটি জাতির বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি। প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ভবিষ্যৎ তহবিল ও গ্র্যাচুইটি বা আনুতোষিক তহবিল গঠনের মাধ্যমে সাধারণত চাকরিজীবীদেরকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করা হয়। যা দেশের মোট সঞ্চয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বেসরকারি চাকরিজীবীরা চাকরি শেষে ভবিষ্যৎ তহবিলে জমানো টাকা ও তার ওপর সুদ বা মুনাফা বাবদ আয় এবং আনুতোষিক তহবিলের কিছু টাকা পেয়ে থাকেন, এটা বেসরকারি চাকরিরতদের ভবিষ্যৎ আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে। গ্র্যাচুইটি ফান্ড বা আনুতোষিক তহবিলের অর্থ পুরোটাই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে জোগান দিতে হয়।
এর আগে ২০১৬ সাল থেকে খাতভেদে ভবিষ্যৎ তহবিল ও আনুতোষিক তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের সুদ বা মুনাফার ওপর কর হিসেবে ১০ শতাংশ হারে উৎস কর কর্তন করা হতো। কিন্তু নতুন আয়কর আইনের অধীনে বেসরকারি চাকরিজীবীদের ভবিষ্যৎ তহবিল ও আনুতোষিক তহবিলের আয়ের ওপর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কর আরোপে বিস্মিত হয়েছেন তারা। সঞ্চয় বা তহবিল বেসরকারি চাকরিজীবীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে। এই অবস্থায় তহবিলের আয়ের ওপর বাড়তি কর বসানোর অর্থ হলো এ ধরনের তহবিলকে নিরুৎসাহিত করা।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ভবিষ্যৎ আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা বিভিন্নভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীদের ভবিষ্যৎ তহবিলে সরকার ১৩ শতাংশ হারে সুদ দিয়ে থাকে, এটা আমানতের ওপর সুদের সর্বোচ্চ হার। সরকারি চাকরিজীবীদের ভবিষ্যৎ তহবিল ও আনুতোষিক তহবিলের আয়ের ওপর কোনো কর নেই। এছাড়া তাদের পেনশনও রয়েছে।
অন্যদিকে বেসরকারি চাকরিজীবীদের আর্থিক নিরাপত্তা কম। তবুও বেসরকারি চাকরিজীবীদের ভবিষ্যৎ তহবিলের আয়ের ওপর বাড়তি কর বেসরকারি চাকরিজীবীদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং আনুতোষিক তহবিলের আয়ের ওপর বাড়তি কর সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ বাড়াবে। যার ফলে বৈষম্য বাড়বে এবং দেশের সঞ্চয় বিরূপভাবে প্রভাবিত হবে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক স্বার্থ ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটি ফান্ডের আয়ের ওপর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কর পুনর্বিবেচনা করে বাতিল করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.