সংযুক্ত আরব আমিরাতে শাখা ক্যাম্পাস খুলতে চায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

উপসাগরীয় অঞ্চলে লাভজনক শিক্ষার বাজার ধরতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কার্যক্রম শুরু করতে আগ্রহী বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাচ্ছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ এডুকেশন ফোরাম ২০২৩ এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্যোক্তারা এ তথ্য জানান। শিক্ষা মেলাটিতে প্রবাসী ও বিদেশি শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা অংশগ্রহণ করেন। গত ১৪ ও ১৫ অক্টোবর দুবাইয়ের দেইরার ক্রাউন প্লাজায় ফোরামের দ্বিতীয় সংস্করণ অনুষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের ১৬৩টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৩০টি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের জন্য একমাত্র আন্তর্জাতিক শিক্ষা রোডশো। দেশের এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্নাতক এবং স্নাতকত্তোর পর্যায়ে ১৪ হাজারের বেশি বিদেশী এবং ৪০ লাখের বেশি বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে।

ফোরামের সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি অনেক শিক্ষার্থী দেশের শিক্ষা বোর্ডের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। এতে তারা বিশ্বমানের শিক্ষার পাশাপাশি দেশজ আবহ পায়। কিন্তু বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অংশগ্রহণ নেই। তাই উচ্চশিক্ষায় দেশজ আবহ চাইলেও পাওয়ার সুযোগ নেই। প্রবাসী বাংলাদেশি বেশি থাকা দেশে বাংলাদেশের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় পাঠদান শুরু করলে অনেক শিক্ষার্থী উপকৃত হবেন। পাশাপাশি সরকারও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন মাধ্যম পাবে।

দুবাই ভিত্তিক মার্কেটিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, পাবলিক রিলেশনস ও মিডিয়া সংস্থাগুলোর জোট প্যান এশিয়ান গ্রুপ এবং ঢাকা ভিত্তিক ফিজিক্যাল এবং ডিজিটাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও মার্কেটিং পরামর্শ সংস্থা স্পাইরাল ওর্য়াল্ডের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ এডুকেশন ফোরাম আয়োজিত হয়। সহযোগিতায় ছিল অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিস অব বাংলাদেশ (এপিইউবি)। টাইটেল স্পন্সর ছিল আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি)।

আয়োজকরা বলেন,  বাংলাদেশের স্বনামধন্য চারটি বিশ্ববিদ্যালয়- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি এখন টাইমস হায়ার এডুকেশনের ১ হাজার র‌্যাঙ্কিংয়ের আওতায় এসেছে। পাঠদান ও পাঠ্যক্রমের মান উন্নত করায় আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিংয়ে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৬৩৯টি পাবলিক, ৫৮০টি প্রাইভেট স্কুলে মোট ২৫ হাজার অনাবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) শিক্ষার্থী এবং ১০ লাখের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের কাছে বাংলাদেশের সাশ্রয়ীমূল্যে বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে এবারের আয়োজন করা হয়।

ফোরামের অনুষ্ঠানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, “বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা খাতকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং প্রতি বছর এ খাতে বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ বাড়ছে। এ কারণেই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখতে পাচ্ছি যা ভালো মানের মানবসম্পদ তৈরি করছে।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের (এআইইউবি) চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আবেদিন, অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটিস অব এশিয়া অ্যান্ড দ্যা প্যাসিফিক’র (এইউএপি) প্রেসিডেন্ট এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, প্যান এশিয়ান মিডিয়ার সিইও এবং বাংলাদেশ এডুকেশন ফোরামের সংগঠক সাইফুর রহমান।

 

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.