ব্যাংক হিসাব খোলায় গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে

শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল ব্যাংকিং সেবার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। এর ফলে আগস্ট মাস শেষে হিসাব সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ লাখ ৮ হাজার ৮২০টি। এর মধ্যে ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৫১৩টি হিসাব গ্রামাঞ্চলে খোলা হয়েছে। আগস্ট মাসে আমানত জমা পড়েছে ২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। আগের বছরের একই মাসে আমানত যা ছিল ২ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা। সে তুলনায় আমানত কমেছে ২৩ কোটি টাকা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের আগস্ট শেষে মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা ৩৯ লাখ ৮ হাজার ৮২০টি। এর মধ্যে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩০৭টি হিসাব শহরাঞ্চলে এবং ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৫১৩টি হিসাব গ্রামাঞ্চলে খোলা হয়েছে।

ব্যাংকগুলোতে স্কুল ব্যাংকিংয়ে হিসাব খোলা অব্যাহত রয়েছে। আগস্টে হিসাব খোলার পরিমাণ বাড়লেও আমানত আগের মাসের তুলনায় কিছুটা কমেছে। বিভিন্ন কারণে দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির ব্যাপক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ পরিবার আর্থিক সংকটে ভুগছে। ফলে স্কুল ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে কমছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। এর প্রভাব স্কুল ব্যাংকিংয়েও পড়েছে। ফলে আগস্টে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের হিসাব ছিলো ৩৮ লাখ ৯৩ হাজার ৩৪৩টি। আগস্টে এ ধরনের হিসাব খোলা হয় ৩৯ লাখ ৮ হাজার ৮২০টি। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে হিসাব খোলার সংখ্যা বেড়েছে ১৫ হাজার ৪৭৭টি।

এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে স্কুল ব্যাংকিংয়ে ২৮ লাখ ২৫ হাজার ৯৯২ শিক্ষার্থীর হিসাব খোলা হয়েছিলো। এ সময় আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিলো ২ হাজার ২১৬ কোটি টাকা।

শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে উৎসাহী করতে ২০১০ সালে স্কুল ব্যাংকিং কর্মসূচীর পুনঃপ্রবর্তন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বেশ সফলতা পায় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তবে করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাব ও আমানতের পরিমাণ কিছুটা কমে আসছে। এরপর থেকেই স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আকর্ষণীয় মুনাফার নানা স্কিম চালু করে।

এদিকে ২০১০ সালে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থীরা টাকা জমা রাখার সুযোগ পায় ২০১১ সাল থেকে। প্রথম বছরে ২৯ হাজার ৮০টি স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলা হয়। এর পরের বছর ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় ব্যাংকগুলোতে ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৩৭টি হিসাব খোলা হয়।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.