সামনের ৫ বছর দেশের অর্থনীতির জন্য সোনালী সময় – বিএসইসি চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, আমি নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক জগৎকে অন্যরকম ভাবে দেখতে পাচ্ছি। আমাদের অর্থনীতির জন্য আগামী ৫ বছর হবে গোল্ডেন ফাইভ ইয়ার্স অব ইকোনোমিক ডেভেলোপমেন্ট।

তিনি বলেন, করোনা আর যুদ্ধবিগ্রহ মাঝে মাঝে আমাদের শ্লো করে দিয়েছে। এখন নির্বাচনের জন্য যা হয় সাধারণত একটু টেনশন থাকে। তারপরেও দেখতে পাচ্ছি একটা সুন্দর অর্থনৈতিক ভবিষ্যত। বিজনেস ফ্যাকাল্টির ছাত্রছাত্রীদের জন্য চাকরি, প্রমোটর হওয়া, ব্যবসা-বাণিজ্য করার একটা বিরাট সুযোগ আসছে।

বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টি অনুষদে আয়োজিত বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট ফর সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ ছায়েদুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের অর্থনীতি দুইভাগে বিভক্ত। মানি মার্কেট এবং ক্যাপিটাল মার্কেট। মানি মার্কেট বাংলাদেশ ব্যাংক দেখভাল করে যেখানে ব্যাংক এবং নন-ব্যাংকগুলো তারা দেখভাল করছেন আর ক্যাপিটাল মার্কেটে প্রায় ১১শত প্রতিষ্ঠান যেখানে বিভিন্ন ব্যাংক, কোম্পানি, ব্রোকারেজ হাউজ, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, ফান্ড ম্যানেজার, মিউচ্যুয়াল ফান্ডসহ অনেক কিছু আমরা দেখি।

অধ্যাপক শিবলী বলেন, বাংলাদেশ কিন্তু সেই বাংলাদেশ আর নেই, ১০-১৫ বছর আগে যে বাংলাদেশ ছিল এই অল্প সময়ে যে একটা ম্যাজিক্যাল পরিবর্তন হয়েছে সেটার কারণেই আমাদের এখন সব রকম প্রয়োজন এবং দিক নির্দেশনা এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনাগুলো পরিবর্তন হয়ে গেছে।

প্যারিস কনসোর্টিয়ামে আমাদের অর্থমন্ত্রীরা যেখানে সাহায্যের জন্য যেত সেখানে আমরা এখন বিজনেস পার্টনারশিপের জন্য। আমরা যাচ্ছি আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য কিভাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ানে বাড়ানে যায় সেই জন্য। এখন বাংলাদেশের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা, রিলেশনশীপ বিল্ডআপ করা, সামনের দিনগুলোতে আরো পার্টনারশীপ বাড়ানো, এখানেই ব্যবসা বাণিজ্য বাড়ানো, বিনিয়োগ করা, সারা বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এখানে তাকিয়ে আছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ১৭ কোটি মানুষের দেশে আমরা এখনি দেখতে পাচ্ছি গার্মেন্ট শিল্পে ২২ শতাংশ শ্রমিক সংকট, ধানকাটার লোক নেই এবং যে অর্থনৈতিক উন্নতি আমরা দেখতে পাচ্ছি তাদের আমাদের কর্মদক্ষ লোকের অভাব হবে সামনে। সুতারাং আমাদের এখনই মনোযোগী হতে হবে ইনভেস্টমেন্টে। ইনভেস্টমেন্টে এমনভাবে মনোযোগী হতে হবে যাতে আমাদের যে গোলে কখনো ফেল করিনি। বাংলাদেশ কখনো কোনো লোন পেমেন্টে ফেল করেনি। আমাদের সামনে গোল হচ্ছে এসডিজি, ২০৪১ এবং ডেল্টা প্লান। সেগুলোতেও আমরা ফেল করতে চাই না।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আমরা দেশি- বিদেশি সবাইকেই উৎসাহিত করবো। বিনিয়োগের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিয়াল হবে, বিনিয়োগের মাধ্যমেই কর্মসংস্থান হবে, বিনিয়োগের মাধ্যমেই প্রোডাক্টশন হবে আর প্রোডাক্টশনের মাধ্যমে আমরা এক্সপোর্ট মার্কেট আরো ওয়ার্ল্ড ওয়াইড করবো। এই সব কিছু যদি আমরা ঠিক সময়ে করতে পারি, দেশে যদি পলিটিক্যালি স্ট্যাবিলিটি থাকে তাহলে কিন্তু আমাদের উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হওয়া খালি একটু সময়ের ব্যাপার।

তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে এখনে বিনিয়োগ করলে রিটার্ন ভালো পাওয়ার সম্ভাবনা আছে এই বিষয়গুলো ইনভেস্টর উইকের মাধ্যমে আমরা সারা বিশ্বে পৌছে দিতে চাই। আমরা চাই দেশিও বিনিয়োগকারীরা আরো বিনিয়োগ করুক, ব্যবসা বড় করুক আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এই দেশ সম্পর্কে জানুক। তারা যদি যাবে অন্য দেশের তুলনা বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিরাপদ এবং ভালো রিটার্ন পাওয়া যায় তাহলে তারা বাংলাদেশ বিনিয়োগ করবে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ক্লাইমেটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হয়েও উন্নত বিশ্ব থেকে সাহায্য পাচ্ছে না। আমাদের ইনভায়রমেন্ট নিয়ে খুবই সচেতন থাকতে হবে। যেকোনো ব্যবসা বাণিজ্য যেন সাসটেইনেবল হয় এবং রাট গভর্নেন্স থাকে এটা এনশিউর করাই হচ্চে আমাদের কাজ।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত আছেন বিএসইসির সাবেক কমিশনার ও শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান হাফিজ মুহাম্মদ হাসান।

 

অর্থসূচক/এমআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.