ইইউর আর্থিক সহায়তা প্রত্যাখ্যান করল তিউনিশিয়া

সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঘোষণা দেয়া আর্থিক সহায়তা প্রত্যাখ্যান করেছেন টিউনিশিয়ার রাষ্ট্রপতি কাইস সাইদ। তিনি বলেছেন, সহায়তার পরিমাণ কম এবং এটি তিন মাস আগে স্বাক্ষরিত অন্য চুক্তির বিরুদ্ধে যায়।

সাইদের এমন প্রতিক্রিয়ার ফলে জুলাই থেকে শুরু হওয়া ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। এই অংশীদারত্বের মধ্যে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং সীমান্ত কঠোর করার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উত্তর আফ্রিকার দেশটি থেকে ইউরোপে আসতে চাওয়া অভিবাসীদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ার ফলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছিল, আফ্রিকা থেকে ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চুক্তির অংশ হিসেবে তিউনিশিয়াকে ১২৭ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা) সহায়তা প্রদান করা হবে।

সাইদ বলেছেন, ইইউ-র ঘোষণা তিউনিশিয়া প্রত্যাখ্যান করেছে। সেটা কেবল অল্প পরিমাণের কারণে নয়, প্রস্তাবটি জুলাই মাসে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ।

জুলাইয়ের চুক্তিতে তিউনিশিয়ার বিপর্যস্ত অর্থনীতি, রাষ্ট্রীয় অর্থ উদ্ধার এবং অভিবাসন সংকট মোকাবেলায় সহায়তার জন্য এক বিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা) প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১০ দিন আগে আগে প্রতিশ্রুতির তুলনায় অনেক কম সহায়তার এই ঘোষণা তিউনিশিয়ার কর্তৃপক্ষকে হতাশ করেছে। দেশটি এখন অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য লড়াই করছে এবং ক্রেডিট রেটিং এজেন্সিগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে দেশটির সরকার আগামি মাসগুলোতে ঋণখেলাপিতে পরিণত হতে পারে।

তিউনিশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকা থেকে ইটালির লাম্পেদুসা দ্বীপে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীর আসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। অভিবাসন চুক্তির বিস্তারিত আলোচনার জন্য গত সপ্তাহে ইউরোপীয় কমিশনের একটি প্রতিনিধি দলের সফর স্থগিত করেছে তিউনিশিয়া।

এর আগে সেপ্টেম্বরে তিউনিশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকের জন্য ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির পাঁচ সদস্যকে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছিল তিউনিশিয়া। তারা বলেছিল, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনুমতি দেয়া হবে না।

জার্মানিসহ কিছু ইউরোপীয় দেশ এই অভিবাসন চুক্তির বিরোধিতা করেছে। দেশগুলো মনে করে যে, সাইদের ক্ষমতা দখলের পর এই রাজনৈতিক এবং মানবাধিকার সংকট তৈরি হয়েছে। সাইদ তিউনিশিয়ার পার্লামেন্ট স্থগিত করে দিয়ে, একটি ডিক্রির মাধ্যমে দেশ শাসন করছেন। বিরোধীরা এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অভ্যুত্থানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.