সৌদি-ইসরায়েল চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যকে কী দেবে?

মার্কিন মধ্যস্থতায় কয়েক মাস ধরে একের পর এক রূদ্ধদ্বার বৈঠকের পর শেষ পর্যন্ত সৌদি আরব ও ইসরায়েল একটি চুক্তি করতে সম্মত হয়েছে৷ গত সপ্তাহে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এই চুক্তি চূড়ান্তের পথে আছে বলে নিশ্চিত করেছেন৷ তার মতে, এটি হতে যাচ্ছে শীতল যুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক চুক্তি৷ মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি৷

এদিকে, গত শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও দুই দেশের মধ্যকার এই আলোচনা নিয়ে উচ্চাশা লুকাননি৷ তবে দুই শীর্ষ নেতৃত্বের এমন আশাবাদে বাস্তবতার প্রতিফলন কতটা তা নিয়ে শঙ্কা আছে অনেকের৷

মোহাম্মদ বিন সালমানের শাসনাধীন সৌদি আরব ২০২১ সালে কাতারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করেছে, আঞ্চলিক ‘শত্রু’ ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে এবং ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুদি বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধের অবসান করতে চাইছে৷

সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উত্তরণের ‘ভিশন ২০৩০’-এর অংশ এসব৷ তেলসমৃদ্ধ দেশটি জ্বালানি তেল ছাড়াও অন্যান্য অর্থনৈতিক উৎস তৈরি করছে৷ জ্বালানি তেলের বদলে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাড়তি মনোযোগ, পর্যটন ও উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিচ্ছে তারা৷ সেদিক থেকে ইসরায়েলের প্রযুক্তি শিল্প সৌদি আরবকে সহযোগিতা করবে৷ এছাড়া ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক অবনতি হলে ইসরায়েলকে পাশে রাখতে চাইবে তারা৷ কারণ ইরান ইসরায়েলেরও শত্রু৷

ইসরায়েলের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থানের বিনিময়ে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকেও কিছু সুবিধা চাইছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা৷ তাদের মতে, সৌদি আরব নিজস্ব নিউক্লিয়ার প্রোগ্রাম চায় এবং সে জন্য তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দরকার৷

রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে সমঝোতা ইসরায়েলের জন্য বিরাট কৌশলগত লাভ৷ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের আর ফিলিস্তিন ইস্যুকে ডিঙ্গাতে হবে না৷ তবে কাজটি যে সহজ হবে না তাও বোঝা যাচ্ছে৷ প্রতিবাদ শুধু ফিলিস্তিনিদের তরফেই হবে তা নয়, ইসরায়েল সরকারের দক্ষিণপন্থি অংশও এতে রাজি হবে না৷

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের জন্য একটা স্থিতিশীল অবস্থা তৈরি অনেক মার্কিনির দীর্ঘদিনের আশা৷ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেই কাজে মধ্যস্থতা করা মানে হচ্ছে আগামী নির্বাচনের প্রচারণায় তা অনেক ভালোভাবে কাজে আসবে৷ একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে জবাব দিতে এই পদক্ষেপ কাজে লাগবে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.