লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত ২৫০, নিখোঁজ হাজারো মানুষ

শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের তাণ্ডবে লিবিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পূর্ব লিবিয়ার তটভূমি ও তার কাছের এলাকা জুড়ে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। রোববার লিবিয়ায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় জ্যানিয়েল। তারপর দুর্গত মানুষকে উদ্ধার করতে গিয়ে সাতজন সেনা নিখোঁজ হয়েছেন।

দেশটির সরকার জানিয়েছে, ঝড়ে একশজনের মৃত্যু হয়েছে। পরে জানা যায়, ডেরমাতে শহরের দুইটি বাঁধ ভেঙে যায়। তাতে শহর পুরো ভেসে গেছে। প্রচুর মানুষ সমুদ্রে ভেসে গেছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ডেরমাতে ১৫০ জন মারা গেছেন। সবমিলিয়ে এখনো পর্যন্ত ২৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

তবে পূর্ব লিবিয়ার সরকারে থাকা নেতা ওসামা হামাদ জানিয়েছেন, অন্ততপক্ষে দুই হাজার মানুষ মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাঁচ হাজার মানুষকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রচুর মানুষ সমুদ্রে ভেসে গেছেন। তবে হামাদের সরকারকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেয়নি। তারা ত্রিপোলির সরকারকে স্বীকৃতি দেয়।

ডেরমার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও ও ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পুরো শহরে পানি। বহু মানুষ গাড়ির ছাদে বসে সাহায়্য চাইছেন। তাদের গাড়ি তীব্র স্রোতে ভেসে যাচ্ছে।

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি বা এলএনএ’র মুখপাত্র আহমেদ মিসমারি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রোববার রাতে বন্যার পানির তোড়ে দেরনা শহর রক্ষাকারী বাঁধ ভেসে যাওয়ায় এই ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে। বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় এর সামনের পুরো জনপদ ও তার সমস্ত অধিবাসী সাগরে ভেসে গেছে। আরো পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে তিনি জানান।

লিবিয়ায় জাতিসংঘের প্রতিনিধি গ্যাগনন বলেছেন, প্রচুর শহর ও গ্রাম বিপর্যস্ত হয়েছে। বন্যা হয়েছে। পরিকাঠামো নষ্ট হয়েছে। প্রচুর মানুষ মারা গেছেন।

ত্রিপোলিতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বীকৃত সরকার ত্রাণের আবেদন জানিয়েছে। তিন সদস্যের প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা সব বন্ধু দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনকে সাহায়্য করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।’

সোমবার তুরস্ক তিনটি বিমানে করে উদ্ধারকারী দলকে পাঠিয়েছে। আমিরাতের প্রেসিডেন্টও জানিয়েছেন, তারাও উদ্ধারকারী দল পাঠাচ্ছেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.