অর্থ আত্মসাত: মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তার কারাদণ্ড

অর্থ আত্মসাতের দায়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট জাহিদ সারোয়ারকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি এক গ্রাহকের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯–এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এই রায় দেন।

জানা যায়, আদালতের রায়ে ব্যাংক কর্মকর্তা জাহিদ সারোয়ারকে ৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আর তাঁর স্ত্রী ফারহানাকে ৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ওই টাকা পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পলাতক এই ব্যাংক কর্মকর্তা দম্পতির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ফেরদৌসী জামান নামের এক নারী বনানীর মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের গ্রাহক। সাত বছর আগে (২০১৬ সাল) তিনি এবং মাইসা আবদুল্লাহ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের বনানী শাখায় একটি যৌথ হিসাব খোলেন। ওই ব্যাংক হিসাবে ২০১৬ সালের ২ থেকে ৮ মের মধ্যে ৬৫ কোটি টাকা জমা করেন তারা। এর তিন মাস পর ফেরদৌসী জামান ওই ব্যাংকেই অক্টোবর মাসে নিজ নামে একটি একক হিসাব খোলেন। পরে যৌথ হিসাবে জমা দেওয়া ৬৫ কোটি টাকা তার নিজ হিসাবে হস্তান্তর করেন। এই হিসাব দুটি তৎকালীন বনানীর মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্টের তত্ত্বাবধানে খোলা হয়।

পরে ব্যাংকে তার হিসাবসংক্রান্ত তথ্য মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাওয়ার জন্য আবেদন করেন ফেরদৌসী জামান। সেখানে তিনি নিজের মুঠোফোন নম্বর উল্লেখ করেন। আসামি জাহিদ সারোয়ার গ্রাহক ফেরদৌসী জামানের স্বাক্ষর জাল করে আরেকটি নম্বর যুক্ত করেন। ওই নম্বর জাহিদ সারোয়ারের নামে নিবন্ধিত ছিল। এ ছাড়া ওই গ্রাহকের স্বাক্ষর জাল করে চেক বই তোলেন আসামি জাহিদ সারোয়ার। সেই চেক দিয়ে ফেরদৌসী জামানের ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা তুলে নেন তিনি। পরবর্তী সময়ে ওই টাকার মধ্যে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা তার স্ত্রী ফারহানা হাবিবের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। পরে আসামি জাহিদ সারোয়ার ও তার স্ত্রী ফারহানা হাবিব ওই টাকা তুলে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় দুদকের পক্ষ থেকে জাহিদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি মামলা হয়। ওই মামলা তদন্ত করে ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। ওই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত বছরের ২৯ আগস্ট আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় ২৩ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.