পরিবার নিয়ে মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় চেয়েছেন ডিএজি এমরান

নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কারণে মার্কিন দূতাবাসে পরিবারসহ আশ্রয় চেয়েছেন বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। বন্ধের দিন হওয়ায় দূতাবাসের মূল ফটকের পাশে একটি কক্ষে তাদের বসিয়ে রেখেছেন নিরাপত্তাকর্মীরা।

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় চাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে তিনি নিজেই জানিয়েছেন।

সাংবাদিকদের এমরান আহম্মদ বলেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। আজকে আমাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন যাবৎ অনবরত হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার ভালোবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ তিনটি ব্যাগে এক কাপড়ে আমার তিন মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

এর আগে ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতির কথা গণমাধ্যমে জানানো ও তিনি বিচারিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে মন্তব্য করার জেরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নিয়োগ বাতিল করে দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

আজ (শুক্রবার) তার নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইং। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এ প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন সলিসিটর রুনা নাহিদ আক্তার।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দ্য বাংলাদেশ ল অফিসার্স অর্ডার, ১৭৭২ (পিও নম্বর ৬) এর ৪ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নিয়োগাদেশ জনস্বার্থে বাতিল করা হলো। পাশাপাশি তাকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। অবিলম্বে তা কার্যকর হবে।

উল্লেখ্য, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন। এ বিষয়ে গত সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’

শতাধিক নোবেলজয়ীর ওই খোলা চিঠির বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে- এমন দাবি করে এমরান আহম্মদ বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এতে স্বাক্ষর করার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করবো না।’

এর পরদিন মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে তাকে হয় পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে কথা বলা উচিত। তিনি সেটি করেননি।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.