বাংলাদেশীদের জন্য ‘নুসুক’ চালু করলো সৌদী সরকার

সৌদী সরকারের ফ্ল্যাগশীপ উদ্যোগ ‘নুসুক’ (nusuk.sa) আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশে তাদের প্রথম রোডশো আয়োজন করে। এই আধুনিক সমন্বিত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যেসকল বাংলাদেশী ধর্মীয় এবং পর্যটনের উদ্দেশ্যে সৌদী আরব ভ্রমণ করার পরিকল্পনা করছেন, তারা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।

রোডশোতে সৌদী হজ্জ ও উমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ডঃ তৌফিগ আল-রাবিয়াহ, নুসুক এপাক (এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল) প্রেসিডেন্ট আলহাসান আলদাববাগ সহ উচ্চপদস্থ সৌদী সরকারী ও বেসরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ যোগ দেন।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই রোডশোতে বাংলাদেশী উমরাহ প্রতিষ্ঠান, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্সী, ট্র্রেড এসোসিয়েশন সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন অংশগ্রহন করে।

সৌদী হজ্জ ও উমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী এবং হজ্জ ও উমরাহ অভিজ্ঞতা কর্মসূচীর চেয়ারম্যান ডঃ তৌফিগ আল-রাবিয়াহ বলেন, “বাংলাদেশের সাথে আমাদের ভ্রাতৃসুলভ সম্পর্ক সময়ের বিচারে পরীক্ষিত ও প্রমানিত। এই সম্পর্ককে আমরা একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই এবং আমরা বর্তমানে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্ভাব্য নতুন ক্ষেত্রগুলো নিয়ে কাজ করছি”।

তিনি আরো বলেন, “দুইটি পবিত্র মসজিদের জিম্মাদার হিসেবে সারা পৃথিবী থেকে আল্লাহর অতিথিদের স্বাগত জানাতে পারা আমাদের জন্য অনেক সম্মানের এবং গর্বের। হজ্জ ও উমরাহ পালন নিরাপদ, সুগম, ঝামেলামূক্ত এবং আরামদায়ক করার জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং এটা আমাদের পবিত্র দায়িত্বও বটে। হজ্জ ও উমরাহ পালনকারীদের অভিজ্ঞতা আরো সমৃদ্ধ করতে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি”।

ফাহ্দ হামিদাদ্দিন, নুসুক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, “বাংলাদেশে আমাদের উদ্বোধনী রোডশো আমাদের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। ক্রস-গভর্নমেন্ট এবং ট্রেড পার্টনারদের সহযোগিতায়, বাংলাদেশী ভ্রমণকারীদের জন্য অসাধারণ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে আমাদের সহায়তা করেছে। ঐতিহাসিকভাবেই, বাংলাদেশ আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশীদার এবং সৌদীর ভিশন ২০৩০ অর্জনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বাজার হিসাবে বিবেচিত। এ বছর এখন পর্যন্ত, আমাদের দেশে ৩৩২,০০০ এর বেশি বাংলাদেশী ভ্রমণকারীকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি এবং ২০৩০ সালের ভিতর এই সংখ্যা তিন মিলিয়ন হবে বলে আমরা আশা রাখি। ভবিষ্যতে আমরা আমাদের প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের সাথে এবং আমাদের ভাই ও বোনদের ওমরাহ পালনের স্বপ্ন, এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি পূরণের সুবিধার্থে তাদের সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করার বিষয়ে আগ্রহী। আমি খুব শীঘ্রই সবাইকে সৌদীতে স্বাগত জানাতে অপেক্ষায় থাকবো”।

নুসুক এপাক (এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল) প্রেসিডেন্ট আলহাসান আলদাববাগ বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো নুসুকের মাধ্যমে বাংলাদেশীদের জন্য সৌদী আরব ভ্রমণ আরো সহজ ও সুগম করা, বিশেষ করে উমরাহ পালনকারীদের জন্য, যাদের সংখ্যা ক্রমান্বয়েই বাড়ছে। সৌদী আরব এ লক্ষ্যে নুসুককে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মুসলিম ভ্রমণকারীরা বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে উমরাহ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন”।

ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে সৌদী সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, ইভিসা সেবা, যুক্তরাজ্য/ যুক্তরাষ্ট্র/ শেনঝেন নাগরিক বা ভিসাধারীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ইভিসা প্রদান, এছাড়াও বাংলাদেশীরা উমরাহ পালনের পাশাপাশি দেশটির অনন্য সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন। উমরাহ ভিসার মেয়াদ ৯০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং যেকোন ভিসাধারী জমজমের পানি পাওয়ার অধিকার রাখেন। বাংলাদেশীরা প্রয়োজনে ৯৬ ঘন্টার স্টপওভার ভিসা নিয়েও উমরাহ পালন করতে পারবেন।

বাংলাদেশ সৌদী আরবের জন্য একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট এবং এবছর অদ্যবধি ৩৩২,০০০ বাংলাদেশী সৌদী আরব ভ্রমণ করেছেন এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা ২৬ লাখে পৌছুবে বলে আশা করা হচ্ছে। সৌদী সরকার বিভিন্ন পার্টনারদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে এবং স্থানীয় পার্টনারদের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের জন্য বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার প্রনয়নে কাজ করছে।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.