উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ভাগনার প্রধান প্রিগোশিন নিহত

রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন নিহত হয়েছে। প্রিগোশিনকে বহনকারী একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে আরও ৯ আরোহীর সাথে প্রিগোশিনও মারা যান। রাশিয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

খবর সিএনএন ও আল-জাজিরার।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসকে উধৃত করে আল জাজিরা লিখেছে,  মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাওয়ার পথে প্রিগোশিনকে বহনকারী উড়োজা্হাজটি বিধ্বস্ত হয়। এতে উড়োজাহাজের সব আরোহী নিহত হয়েছেন। উড়োজাহাজাটি কী কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অনেকেরই সন্দেহ এর পেছনে অন্তর্ঘাতমূলক বিষয় থাকতে পারে।

মস্কোর এক সাংবাদিক ড্যানিয়েল্ড হকিন্স আল জাজিরাকে বলেছেন,  আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে উড়োজাহাজটিকে ভূপাতিত করা হয়ে থাকতে পারে।

ভাগনারপ্রধান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল ভাগনার সেনারা। এছাড়া লিবিয়া, নাইজারসহ বিভিন্ন দেশে ভাগনারের জোরালো উপস্থিতি আছে। মূলত পুতিনের পৃষ্ঠপোষকতার কারণেই প্রিগোশিনের ভাগনার যুদ্ধের মাঠে বড় এক শক্তি হয়ে উঠেছিল।

চলতি বছরের গোড়ার দিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীসহ দেশটির সামরিক নেতৃত্বের সাথে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে প্রিগোশিনের। তার অভিযোগ, রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের একটি বড় অংশ অথর্ব ও অযোগ্য। তাদের বিরুদ্ধে চাহিদামাফিক ভাগনারকে অস্ত্র সরবরাহ না করে তার যোদ্ধাদেরকে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগও ছিল প্রিগোশিনের।

সম্পর্কের এই টানাপোড়েন এক সময় বিদ্রোহে রূপ নেয়। গত জুন মাসে ২৩ তারিখে প্রিগোশিন রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের জন্য ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কোর দিকে অভিযান শুরু করেন। পথে কয়েকটি শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন ভাগনারের যোদ্ধারা। ভাগনারের নিয়ন্ত্রণে যায় গুরুত্বপূর্ণ একটি রুশ সেনাঘাঁটি।

প্রিগোশিনের বিদ্রোহের জেরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। পরবর্তী সময়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় অভিযান বন্ধের ঘোষণা দেন প্রিগোশিন। সমঝোতায় বলা হয়, প্রিগোশিনসহ ভাগনার সেনারা রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যাবেন।

বিদ্রোহের পর ভাগনার সেনারা বেলারুশে চলে যান। তবে ভাগনারপ্রধান প্রিগোশিনের অবস্থান নিয়ে জল্পনাকল্পনা রয়ে যায়। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, তিনি বেলারুশে আছেন। এমনকি তাঁর রাশিয়া সফর এবং পুতিনের সঙ্গে দেখা করার খবরও জানা যায়। কিন্তু কখনোই প্রকাশ্যে আসেননি তিনি।

এদিকে দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকার পর মাত্র দুদিন আগে প্রিগোশিন একটি প্রকাশ্যে আসেন। টেলিগ্রামে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি মরুভূমিতে অস্ত্র হাতে ইসলামী জঙ্গীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ঘোষণা দিচ্ছেন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.