নোবিপ্রবির আবদুল মালেক উকিল হলে শোকাবহ আগস্টের আলোচনা সভা   

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর মাস শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে সোমবার (২১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হল কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনীর উপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন, কুইজ প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা উন্মোচন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: দিদার-উল-আলম। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ড. মেহেদী হাসান রুবেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সহকারী প্রভোস্ট মো: ইফতেখার পারভেজ এবং সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুস সাকিব খান সহ হলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

আলোচনা অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: দিদার-উল-আলম বলেন, আমি এই শোকের মাসে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। সেই সাথে ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। পাকিস্তানীরা প্রথম থেকেই বাঙ্গালী জাতিকে কোনঠাসা করে রেখেছিল আর তাদের বৈষম্য নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার কন্ঠে আওয়াজ তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৯ সাল থেকেই রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি তার ৫৫ বছরের জীবদ্দশায় ১৩ বছরই জেল খেটেছিলেন বাংলার গণমানুষের জন্য। অথচ আজ কিছু লোক সেই ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করছে। আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী বলেন, পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা আজও আমাদের মাঝে বসবাস করছে। তারা ২৫ মার্চে যেমন ঘুমন্ত বাঙ্গালীর উপর হামলা করেছিল তেমনি ১৫ আগস্টও তারা গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে অনেক ধরণের প্রপাগান্ডা ছড়ায়। তিনি তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়ে বলেন তারা যেন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা করেন এবং সঠিক ইতিহাস উদঘাটন করেন।

অনুষ্ঠানে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই সাথে স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া ৩০ লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদদের। ঘাতকেরা ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করতে পারলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে পারেনি। আর তাই তারা ২০০৪ সালে শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা চালায়। তরুণ ছাত্রদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সোনার বাংলা গড়ার জন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।  যেন কেউ কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী করতে না পারে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

এর আগে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হলে। এতে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন এবং পাঁচজন শিক্ষার্থী পুরষ্কার লাভ করেন। বিজয়ীরা হলেন জাহিদুল ইসলাম, মো: আসিফুজ্জামান নিবিড়, শাহাজাহান, মো: আফজাল হোসেন এবং খোকন আলী। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন নোবিপ্রবির ১৪ তম ব্যাচের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র মেহেদী হাসান নাঈম। অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয় এবং পঁচাত্তর এর ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নিহত শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৬ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ জাতীয় শোক দিবসে শাহাদাত বরণকারী শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হল।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.