যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মহড়ার মুখে কিমের কড়া বার্তা

কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা কখনো পুরোপুরি দূর হয় না৷ এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া বাৎসরিক যৌথ সামরিক মহড়া শুরুর আগেই উত্তর কোরিয়া বেশ প্রতীকী পদক্ষেপ নিয়ে নিজস্ব শক্তি প্রদর্শন করলো৷ সে দেশের শীর্ষ নেতা কিম জং উন নিজে পূর্ব উপকূলে এক যুদ্ধজাহাজ থেকে কৌশলগত ক্রুজ মিসাইল উৎক্ষেপণ পরিদর্শন করে কড়া বার্তা দিয়েছেন৷

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ এই খবর জানিয়েছে৷ রাষ্ট্রীয় সূত্র অনুযায়ী যুদ্ধজাহাজের আক্রমণের ক্ষমতা ও মিসাইল সিস্টেমের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ সেইসঙ্গে ‘প্রকৃত যুদ্ধ’ হলে হামলা চালানোর জন্য নাবিকদের ক্ষমতার উন্নতিও জরুরি ছিল৷ কেসিএনএ জানিয়েছে, কিম সব দেখেশুনে অত্যন্ত সন্তুষ্ট৷

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের লক্ষণ আগেই শনাক্ত করা হয়েছিল৷ তবে কেসিএনএ সংস্থার দাবিকে বাস্তবের তুলনায় ‘অতিরঞ্জিত’ বলে মন্ত্রণালয় বর্ণনা করেছে৷ তবে উত্তর কোরিয়া ঠিক কী করেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি৷ আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া পূর্বঘোষিত ‘উলচি ফ্রিডম শিল্ড’ নামের গ্রীষ্মকালীন সামরিক মহড়া শুরু করেছে৷ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সেই মহড়া চলবে৷ উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকির জবাব দিতে প্রস্তুতি হিসেবেই এই মহড়া চালানো হচ্ছে বলে দুই দেশ জানিয়েছে৷ চলতি বছরের মহড়া এ যাবৎ সবচেয়ে বড় হবে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী আগেই জানিয়েছিল৷ জাতিসংঘের কমান্ডের কয়েকটি সদস্য দেশও মহড়ায় অংশ নিচ্ছে৷

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়েওল জানিয়েছেন, এবারের সামরিক মহড়া শুধু প্রচলিত যুদ্ধের প্রস্তুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই৷ সাইবার যুদ্ধ, সন্ত্রাসী হামলা বা ড্রোন হামলার মুখে কী করা যায়, সেই প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে৷ তাছাড়া উত্তর কোরিয়া ভুয়া খবরের অভিযানও চালাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন৷ সম্ভাব্য উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা সামরিক মহড়া বানচাল করতে আগেই কনট্র্যাকটরদের ইমেল হামলা চালিয়েছে৷

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ইয়ুন বলেন, একমাত্র অপ্রতিরোধ্য শক্তির মাধ্যমে প্রকৃত শান্তি আসতে পারে৷ একতরফা ভিক্ষার আবেদন বা গুডউইল দিয়ে কিছু হবে না৷ তাঁর মতে, উত্তর কোরিয়া বার বার আগে থেকেই পরমাণু অস্ত্র হামলা ও আগ্রাসী যুদ্ধের কথা বলে৷ কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া যে কোনো উসকানির উচিত জবাব দিতে প্রস্তুত৷

দক্ষিণ কোরিয়ার নেতৃত্ব সামরিক মহড়ার মুখে উত্তর কোরিয়ার কোনো পালটা পদক্ষেপের আশঙ্কা করছিল৷ প্রতিবাদ দেখাতে সে দেশ ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা বা অন্য কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেবে, সৌল এমনটা ধরেই নিয়েছিল৷ তার উপর গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও আমেরিকার যৌথ শীর্ষ সম্মেলনের কারণে উত্তর কোরিয়া আরো মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে তাদের ধারণা৷ গত দুই বছর ধরেই পিয়ং ইয়ং কৌশলগত ক্রুজ মিসাইল পরীক্ষা করছে৷ সেগুলির উপর পরমাণু অস্ত্র বসানো সম্ভব বলে অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এএফপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.