ডিজিটাল ব্যাংকে বিনিয়োগ করতে চায় বাংলালিংক

ডিজিটাল ব্যাংকের বিনিয়োগ করতে চায় মোবাইল অপারেটর কোম্পানি বাংলালিংক লিমিটেড। কোম্পানিটি মূল কোম্পানি ভিওন লিমিটেডের সঙ্গে মিলে ব্যাংকটি খুলতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করবে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) কোম্পানির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলালিংক ভিওনের পূর্ণ মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। ডিজিটাল ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন বাংলাদেশের ডিজিটাল ক্ষমতায়নের প্রতি ভিওনের প্রতিশ্রুতির একটি প্রতিফলন।

এতে বলা হয়, দেশের অন্যতম মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক ৪ কোটি ২ লাখেরও বেশি গ্রাহককে ডিজিটাল সেবা প্রদান করছে। বাংলাদেশে ডিজিটাল সেবার প্রসারে বাংলালিংকের রয়েছে উল্লেখযোগ্য অবদান। বিশেষ করে এটি স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং বিনোদনের মতো খাতকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত করেছে। বাংলালিংকের মাইবিএল সুপার অ্যাপটি মাসিক ৭১ লাখ সক্রিয় ব্যবহারকারী নিয়ে ডিজিটাল সম্পৃক্ততার বিশেষ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। মাইবিএল বাংলাদেশের অন্যতম ডিজিটাল হেলথ এগ্রিগেটর।

এছাড়াও এটি  মিউজিক, গেমিং এবং শিক্ষা থেকে শুরু করে টিকিট বুকিং ও নিরবচ্ছিন্ন ইউটিলিটি বিল পেমেন্টসহ বিস্তৃত পরিসরে নানান রকম সেবা প্রদান করে। বাংলালিংকের টফি দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বিনোদন অ্যাপ্লিকেশন এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, যেটি প্রতি মাসে প্রায় ১ কোটি দর্শককে অডিও এবং ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা প্রদান করে। যেকোনো মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকরা টফি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও টফি দেশের একমাত্র লোকাল ইউজার-জেনারেটেড কনটেন্ট প্ল্যাটফর্ম, যেখানে দুই লাখেরও বেশি নিবন্ধিত লোকাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রয়েছে। কোম্পানিটি দেশব্যাপী সম্প্রসারণ ও উচ্চ মানের ফোর-জি কভারেজ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এর নেটওয়ার্কে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে। বাংলালিংক নেটওয়ার্কের গতি ও কভারেজের জন্য ২০২০ সাল থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পেয়ে আসছে।

ডিজিটাল ব্যাংকিং লাইসেন্সের অনুমতি দেওয়া হলে বাংলালিংকের কার্যক্রম ফিনটেকে সম্প্রসারিত হবে, যার ফলে ডিজিটাল অপারেটর হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি ভিওনের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সেবা দিতে পারবে। ভিওন গ্রুপ ৬টি দেশে মোবাইল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রতি মাসে ২ কোটি ৬০ লাখ সক্রিয় গ্রাহককে ফিনান্সিয়াল সার্ভিস দিচ্ছে। কিছু দেশে প্রতিষ্ঠানটি ডিজিটাল লোন সার্ভিসও প্রদান করছে।

বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস বলেন, বাংলাদেশ ১৭ কোটি ৩ লাখ মানুষের একটি দেশ, যেখানে ব্যাংকিং সেবার পরিসর সীমিত। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প ও উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডিজিটালাইজেশন বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে আসবে। বাংলালিংক এই যাত্রার প্রথম পর্যায়ে দেশের জনগণকে সেবা দেওয়ার বিশেষ সুযোগ পেয়েছে। এখন আমরা ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। এই পদক্ষেপের জন্য আমরা বাংলালিংকের ও আমাদের গ্রুপ পর্যায়ের দক্ষতা ও সক্ষমতাকে কাজে লাগাবো।

ভিওনের গ্রুপ সিইও কান তেরজিওগ্লো বলেছেন, ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের প্রতি বাংলালিংকের আগ্রহ ডিজিটাল ক্ষমতায়নের প্রতি ভিওনের প্রতিশ্রুতিকে বিশেষভাবে প্রতিফলিত করে। এটি ভিওনের ডিজিটাল অপারেটর কৌশলের একটি মূল ভিত্তি, যা আমাদের সব মার্কেটে চালু রয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলালিংককে এর উদ্ভাবন, ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ও বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের কার্যক্রমকে সহযোগিতা করার মতো দক্ষতা আমাদের রয়েছে। ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের জন্য এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যকে ত্বরান্বিত করতে চাই। বাংলালিংকের ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তনের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছে তার ওপর ভিত্তি করেই আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।

ভিওন ২০২১ সালে ডিজিটাল অপারেটর ১৪৪০ কৌশল নিয়ে আসে। ৬টি দেশে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ডিজিটাল অ্যাপ্লিকেশন ও সার্ভিস চালু করেছে। প্রতিটি দেশের জন্য প্রাসঙ্গিক ডিজিটাল অভিজ্ঞতা প্রদান ও ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রাখার পাশাপাশি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিভা বিকাশে সাহায্য করছে ভিওন। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ভিওনের অপারেটিং কোম্পানিগুলির ডিজিটাল সার্ভিসের মোট মাসিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৭.৭৬ কোটি। এর ডিজিটাল সার্ভিসের মধ্যে রয়েছে ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ডিজিটাল বিনোদন (টিভি, সংগীত, গেমিং ও আরও অনেক কিছু), ডিজিটাল স্বাস্থ্য, ডিজিটাল লার্নিং, ব্যবসায়িক সমাধান ও শিল্পভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.