আসল রত্নপাথরের নিশ্চয়তা দিচ্ছে শেষ দর্শন আজমেরী জেমস হাউজ

মূল্যবান পাথর জমাতে পছন্দ করেন অনেকেই। কেউ বা এই বাহারি রঙের পাথরগুলো অলঙ্কার হিসেবে হাতে কিংবা গলায়। পরিধান করেন। এর পেছনে থাকে বিভিন্ন উদ্দেশ্য। সে যাই হোক, সর্বচেয়ে বড় প্রশ্নটি হলো-বাজারে তো অনেকেই পাথর বিক্রি করে, কিন্তু আসল রত্ন পাথর কোথায় পাওয়া যায়?

শেষ দর্শন আজমেরী জেমস হাউজের কথা আপনি হয়ত শুনে থাকবেন। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বসুন্ধরা সিটিতে তাদের বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি তাদের কাছে গেলে আসল রত্নপাথর পাওয়া যায়। শতভাগ আসল রত্নপাথরের নিশ্চয়তা দিচ্ছে শেষ দর্শন আজমেরী জেমস হাউজ। তারা বলছে- নকল রত্নপাথরে নাকি বাজার সয়লাব। প্রাকৃতিক রত্নপাথর বিক্রয়ের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান তাদেরটিই। এটি ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছে আসল রত্নপাথর। রঙিন পাথর সংগ্রহকারীদের জন্য প্রতিষ্ঠানটি যে কোনো রত্নপাথর কেনাকাটাতেও বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার এবং লিটন দেওয়ান চিশতী বলেন, বাজারে নানা রকম রত্নপাথর পাওয়া যায়। চোখ ধাঁধিয়ে যায় তাদের রঙ আর উজ্জ্বল বর্ণচ্ছটা দেখলে। কিন্তু এসব রত্নপাথরের ভীড়ে কী করে চিনবেন বা কিনবেন আসল পাথর। সেটা বড় প্রশ্ন। তার মতে, রত্নপাথর আসল নাকি নকল বোঝার জন্য প্রয়োজন অভিজ্ঞ চোখ। জানতে হবে, রত্নপাথরের আকৃতি, রঙ, স্বচ্ছতা, এবং ভেতরের সূক্ষ্ম পদার্থ সম্পর্কে। পাথরের গঠন-বিন্যাস দেখে প্রাথমিক ধারণা তৈরি করতে হবে সঠিক পাথর বাছাই করার জন্য।

বাংলাদেশে রত্নপাথর

বলা যায়- বাংলাদেশ রত্নপাথরের জন্য একটি রহস্যময়ী দেশ। এখানে বিভিন্ন ধরনের রত্নপাথর কিনতে পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে, হীরা, কবি, নীলকান্তমণি, পান্না, মুক্তা, প্রবাদ, জেড, অ্যামেথিস্ট, টুপাজ এবং আরও অনেক কিছু। ভারতবর্ষে রত্নপাথরের খনি কমেছে বলে শোনা যায়। জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে, পারস্য সম্রাট সাইরাস এর সেনাবাহিনী ভারতবর্ষে একটি রত্নপাথরের খনি আবিষ্কার করেছিল। বাংলাদেশ তখন ভারতের অংশ ছিল। এই খনি থেকে প্রাপ্ত রত্নপাথরগুলি সাইনাসের সাম্রাজ্যে খুবই জনপ্রিয় ছিল।

রত্নপাথরের খনিগুলো এখনও সক্রিয়। প্রতি বছর প্রায় ১০০০ টন রত্নপাথর উৎপাদিত হয়। এই রত্নপাথরগুলি বিদেশে রপ্তানি করা হয় এবং এগুলি থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। এই রত্নপাথরগুলোর মান খুব ভাল। বিশ্বের অন্যতম সেরা রত্নপাথর হিসাবে বিবেচিত হয়। এসব পাথরের চাহিদা বিশ্বব্যাপী। এগুলো অলঙ্কার, গহনা এবং অন্যান্য সৌন্দর্য সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের রত্নপাথর শিল্প একটি সম্ভাবনাময় শিল্প। এটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। সরকার পাথর শিল্পের বিকাশের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপকে উৎসাহ দিচ্ছে। এই পদক্ষেপগুলোর ফলে রঙিন পাথর শিল্প আরও সমৃদ্ধ এবং লাভজনক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রত্ন পাথর কী?

এটি এমন পাথর যা প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয় এবং এর বিশেষ সৌন্দর্য, ঔজ্জ্বল্য এবং স্থায়িত্বের জন্য খ্যাতি পায়। এসব পাথর বিভিন্ন রঙ, আকার এবং আকারে পাওয়া যায় এবং এগুলো বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, যেমন সজ্জা, অলঙ্কার, চিকিৎসা এবং জ্যোতিষশাস্ত্র। এসব সামগ্রিকে বিভিন্ন উপায়ে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যেমন তাদের রঙ, কাঠিন্যতা, প্রতিসরণাঙ্ক এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলির উপর ভিত্তি করে। কিছু জনপ্রিয় রত্ন পাথর রয়েছে। এগুলো হলো- হীরা, নীলকান্তমণি, পোখরাজ, মুক্তা, রুবি, পোখরাজ, সবুজ পান্না এবং গোমেদ।

রত্ন পাথরের বিভিন্নভাবে ব্যবহার

সাজ-সজ্জা: অলঙ্কার, যেমন আংটি, নেকলেস, ব্রেসলেট এবং দুল তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় এই কঠিন পদার্থ। প্রাকৃতিক চিকিৎসা: ঐতিহ্যগত চিকিৎসা পদ্ধতিতে, যেমন আকুপাঙ্কচ্চার এবং হোমিওপ্যাথিতে ব্যবহার করা হয় এদের। জ্যোতিষশাস্ত্র: বিভিন্ন মহলে বিশ্বাস করা হয় যে এসব বস্তু মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে।

রত্ন পাথর চেনার উপায়

রত্ন পাথরগুলো মূল্যবান এবং অপ্রধান এই দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয়। মূল্যবান রত্ন পাথরগুলো সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট, এত এত অনন্য বৈশিষ্ট্য থাকে যা অপ্রধান রত্ন পাথরগুলোতে থাকে না। অপ্রধান রঙিন পাথর সাধারণত গ্লাস, সিরামিক না অন্যন্যে কৃত্রিম উপকরণ দিয়ে তৈরি হয় এবং সেগুলোকে মূল্যবান রত্ন পাথরের মতো দেখানোর জন্য রঙিন এবং পালিশ করা হয়। ঘাঁটি বঙিন পাথর চেনার জন্য কিছু সহজ উপায় রয়েছে। এই উপায়গুলোর মধ্য থেকে আপনি চেষ্টা করুন:

একটি উজ্জ্বল আলোর নিচে পাথরকে ধরুন এবং দেখুন যে এটি কীভাবে আলো প্রতিফলিত করে। আসল রত্ন পাথরগুলি আলোকে সুন্দরভাবে প্রতিফলিত করে এবং এগুলিতে একটি ঔজ্জ্বল্য থাকে। নকল পাথরে আলো প্রতিফলিত হয় না এবং এগুলোতে একটি নিস্তেজ আলো থাকে। পাথরকে কিছু দিয়ে ঘষতে পারেন। যদি দাগ না পড়ে তাহলে আসল পাথর। দাঁত দিয়ে যথার কথা বলেন অনেকে। পরিষ্কার কাপড়েও ঘষতে পারেন। আপনি জানলে অবাক হবেন, এসব বস্তু পরীক্ষার জন্য টেস্টার রয়েছে। পাথরটিকে একটি টেস্টার দিয়ে পরীক্ষা করুন। এই টেস্টার রত্ন পাথরের কাঠিন্যতা, প্রতিসরণাঙ্ক (Refractive Index) এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলি পরিমাপ করে এবং এগুলির সাহায্যে আসল এবং নকল পাথর চিহ্নিত করে। এসব বস্তুর প্রতিসরণাঙ্ক তালিকা জেনে নিলে সুবিধা হবে। বিশেষ রত্ন-পাথরের প্রতিসরণাংক নির্দিষ্ট-এর হেরফের বিশেষ দেখা যায় না। যেমন হীরার প্রতিসরণাংক- ২,৪১৭। যদি আপনি কোনও রত্ন পাথর কিনতে চান, তাহলে একজন অভিজ্ঞ জহুরির সাথে পরামর্শ করতে পারেন। একজন জহুরি আপনাকে আসল রত্ন পাথর চিনতে এবং এর সঠিক মূল্য নির্ধারণে সাহায্য করতে পারবেন।

রত্ন পাথর কিভাবে কাজ করে?

প্রাকৃতিক রঙিন পাথরের উজ্জ্বল্য এবং সৌন্দর্য তাদের অভ্যন্তরীণ গঠন এবং রাসায়নিক গঠনের কারণে হয়। এগুলো বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ থাকে যা আলোকে প্রতিফলিত করে এবং এগুলোকে অনন্য রঙ দেয়। রত্ন পাথরগুলো বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। এসবের সৌন্দর্য এবং উজ্জ্বলা মানুষকে যুগ যুগ ধরে মুগ্ধ করে আসছে। এই গোলাপী, সবুজ, কিংবা নীলগুলোর চিকিৎসাগত এবং জ্যোতিষশাস্ত্রীয় গুণাবলী বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়। তবে, অনেক মানুষ বিশ্বাস করে যে এগুলো তাদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সাহস ও আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.