চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশের রপ্তানি খাত নিয়ে এসেছে স্বস্তির খবর। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধজনিত বৈশ্বিক অর্থনীতির শ্লথ গতির মধ্যেও বেড়েছে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়। বিশেষ করে, রপ্তানি বাণিজ্যের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের আয়ে বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বুধবার (২ আগস্ট)রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে রপ্তানি খাতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে। এ আয় চলতি বছরের জুলাই মাসের লক্ষ্যমাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে।আয় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমকি ৫০ শতাংশ বেশি।
ইপিবির তথ্য মতে, চলতি বছরের জুলাই মাসে বিদেশে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪৫৯ কোটি ২৯ লাখ ডলার আয় হয়েছে, যা গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ৬০ কোটি ৮১ লাখ ডলার বেশি। গত অর্থবছরের (২০২২-২৩) জুলাই মাসে রপ্তানি বাবদ আয় হয়েছিল ৩৯৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার।
অন্যদিকে, চলতি বছরের জুলাই মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৪৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। বাস্তবে এর চেয়ে ১১ কোটি ১৯ লাখ ডলার বেশি আয় হয়েছে।
বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশ ২৬ ধরনের পণ্য রপ্তানি করে। এর মধ্যে ১৭টি খাতের রপ্তানি বেড়েছে। এই ১৭ খাতের মধ্যে যথারীতি রপ্তানি সবচেয়ে বেশি হয়েছে পোশাক খাত থেকে।
জুলাই মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতে ৩৯৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার আয় হয়েছে, যা গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ৫৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলার বা ১৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। গত বছরের জুলাই মাসে এই খাতে ৩৩৬ কোটি ৬৯ লাখ ডলার আয় হয়েছিল। এই খাতে আয়ের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ কোটি ৫৮ লাখ ডলার বা ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার।
তৈরি পোশাক খাতের মধ্যে নিট পোশাক উপ-খাতে আয় হয়েছে ২২৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। নিট পোশাকের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রবৃদ্ধি ২২ দশমিক ২৪ শতাংশ।
অন্যদিকে ওভেন পোশাক উপ-খাতে রপ্তানি-আয় হয়েছে ১৬৮ কোটি ৭২ লাখ ডলার। ওভেন পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অন্য খাতগুলোর মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল গত বছরের জুলাই মাসের আয় ও এবছরের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় কাছাকাছি। এবারের জুলাই মাসে এই খাতে ৯ কোটি ৮৭ লাখ ডলার আয় হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় শুন্য দশমিক ৬৭ শতাঙশ কম কিন্তু এবারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কৃষিপণ্য রপ্তানি ১৪.৫৩ শতাংশ বেড়ে ৭ কোটি ২৫ লাখ ডলার হয়েছে। জুলাই মাসে এখাতের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ কোটি ৭৫ লাখ ডলার, অর্থাৎ তার চেয়ে ৭.৪৬ শতাংশ বেশি হয়েছে ।
পাট ও পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় বাড়লেও তা এ বছরের জুলাইয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি। এই খাতে জুলাই মাসে আয় হয়েছে ৬ কোটি ৫৬ লাখ ডলার, যা গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি, কিন্তু এবারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ কম।
অন্যদিকে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি খাতে আয়ের পরিমাণ গত ৪ শতাংশ কমে ৩ কোটি ৩৯ লাখ ডলার হয়েছে। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.