সামাজিক সুচকের উন্নয়নে রাষ্ট্রের বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠনগুলোকে সহযোগী ভূমিকায় নিতে হবে

বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের প্রচেষ্ঠায় উন্নয়নশীল থেকে মধ্যআয়ের দেশে উপনীত হতে যাচ্ছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় মূল সুচক নয়। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মানুষের আচরনগত অভ্যাস ও চর্চার মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে অবশ্যই সরকারকে বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠনগুলোকে এই প্রক্রিয়ার অন্যতম অংশীদার হিসাবে বিবেচনায় নিতে হবে। না হলে ইট, পাথর ও কনক্রিটের অবকাঠামোতে মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে যাবে। সরকারের নানাবিধ উন্নয়ন কর্মকান্ডে দেশের অনেক গুলো সুচকেইতিবাচক পরিবর্তন হলেও দরিদ্র বান্ধব শাসন ব্যবস্থা এখনও অনেক দূর। সেখানে প্রশাসন ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে দরিদ্র মানুষের সমঅংশগ্রহন নিশ্চিত করা না গেলে ধনী দরিদ্রের আয় বৈষম্য সমাজে অস্থিরতা বাড়াবে। বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠনগুলো সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে নিরবিচ্ছন্নভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করলেও তাদের জন্য সহায়ক কর্মপরিবেশ তৈরী সম্ভব হয়নি। নানা ছোতায় বিধিবিধান ও নিয়মকানুনে আটকানোর প্রচেষ্ঠা থাকে। যা সমাজে সুশাসন ও ন্যায্য সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে বড় অন্তরায়।

শনিবার (২২ জুলাই) চট্টগ্রামের পটিয়াস্থ বিটা কালচারাল এন্ড কমিনিউকেশন ট্রাস্ট মিলনায়তনে দেশের এনজিওদের শীর্ষ সমন্বয়কারী প্রতিষ্ঠান এসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ (এডাব)চট্টগ্রাম জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মতবিনিময় সভা-২০২৩ এ বিভিন্ন বক্তাগণ উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

এডাব কেন্দ্রিয় নির্বাহী সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু‘র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এডাব চেয়ারপারসন আব্দুল মতিন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এডাব‘র কোষাধক্ষ্য মাসুদা ফারুক রত্না,  বিটা‘র নির্বাহী পরিচালক শিশির দত্ত, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এডাব কার্যনির্বাহী পরিষদের সাবেক সদস্য এস এম নাজের হোসাইন, ইপসা‘র প্রধান নির্বাহী পরিচালক ও এডাব কার্যনির্বাহী পরিষদের সাবেক সদস্য মোঃ আরিফুর রহমান এবং এডাব‘র পরিচালক একেএম জসীম উদ্দীন।

এডাব‘র কর্মসূচী পরিচালক কাউসার আলম কনক‘র এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ স্ব স্ব জেলার বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠনসমূহের বিভিন্ন সমস্যা, চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও প্রত্যাশার কথা তাঁদের বক্তব্যে তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডাব চেয়ারপারসন আব্দুল মতিন বলেন মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশকে পুর্নঃগঠনে কিছু সমাজ দরদী লোকের প্রচেষ্ঠায় দেশে বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। সমাজ পরিবর্তন ও দরিদ্র মানুষের কল্যানে বেসরকারী উন্নয়নসংগঠনগুলো কার্যক্রমকে নানাভাবে স্থবির করার জন্য বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন কলাকানুন দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করা হলেও বর্তমান সরকারের অনেকগুলি উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত এডাব সদস্য সংগঠনগুলো সরকারের পাশে ছিলো। দরিদ্র জনগোষ্ঠির ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় এধারাকে বারবার বানিজ্যিকীকরণের চেষ্ঠা করা হলেও এখনও এধারা থেমে যায়নি।  এডাব দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়নে সংঘশক্তি, আর এর সাথে যুক্ত সদস্য সংগঠনগুলো সমাজ পরিবর্তনের এক একজন উদ্যেক্তা। যাদের হাত ধরে দেশ একদিন অবশ্যই সত্যি কারের সোনার বাংলায় পরিনত হবে।

 

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.