বিএনপির অনেক নেতার পাচারকৃত অর্থ বিদেশে জব্দ রয়েছে: শেখ হাসিনা

বিএনপির অনেক নেতার পাচার করা অর্থ বিদেশে ফ্রিজ অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব অর্থ সরকার পর্যায়ক্রমে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।

বুধবার (১৯ জুলাই) রাতে গণভবনে ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ১৪ দলীয় জোটনেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শেখ হাসিনা বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে দেশের যে দুরবস্থা ছিল সেটাও উল্লেখ করেন।

দুর্নীতি করে তারেক-কোকোর পাচার করা ৪০ কোটি টাকা সরকার ফিরিয়ে এনেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান জানান, মুশকিলটা হলো যেসব দেশে টাকাটা রাখে তারা ছাড়তে চায় না। বিএনপির অনেক নেতার টাকা ফ্রিজ করা আছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি পর্যায়ক্রমিকভাবে সেগুলো নিয়ে আসতে।

তিনি বলেন, আমরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সমস্যায় পড়ে গেছি। যার ফলে স্যাংশন-কাউন্টার স্যাংশন। এরফলে কেনাকাটা, অর্থ আদানপ্রদান, মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে।

সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। আমাদের দেশের মানুষের একটা দৃষ্টিভঙ্গি আছে— যখন পেয়ে যায় তখন তার কদরটা ভুলে যায়। মাঝখানে হঠাৎ কয়লা ও গ্যাসের দাম বেড়ে গেলো, বেড়ে যাওয়ার চেয়ে বড় বিষয় ছিল পাওয়াই যাচ্ছিল না। যেখানে যাচ্ছি সমস্ত জিনিস কেনা হয়ে গেছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সব কেনা। এরকম অবস্থায় পড়ে গিয়েছিলাম। তখন কিছুদিন কয়লার অভাব হলো। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন একটু কমে গেলো। লোডশেডিং আমাদের দিতে হলো। লোডশেডিং দিয়ে একটা জিনিস আসলে ভালোই হয়েছে যে কী অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ সেটা বোধহয় একটু উপলব্ধি করতে পারলো। এখন সেই অবস্থার থেকে আমরা উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন পদ্ধতি আসছে। হাইড্রোইলেকট্রিসিটি— পানি থেকে বিদ্যুৎ। আমরা সেটা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি। কেউ যদি এটা করতে চায় আমরা তাদের সেই সুযোগটা দেবো।

বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশটা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-দুর্নীতিসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়— মূল আদর্শ থেকে বাংলাদেশের বিচ্যুতি ঘটে। সারা বিশ্বের কাছে দেশকে হেয় প্রতিপন্ন করে। তাদের দুঃশাসন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কারণেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা হয়।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ২০২৩ পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় আছি। আজ পর্যন্ত এটুকু দাবি করতে পারি এই সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশটা বদলে গেছে। নিশ্চয়ই আপনারা তা উপলব্ধি করেন।

বৈঠকে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাতীয় পার্টি (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম প্রমুখ নেতারা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.