ওয়ানডেতে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস

টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলেও শেষ ম্যাচে জিতে ছন্দ খুঁজে পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রইল সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেও। মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৪০ রানে জিতে সিরিজে এগিয়ে এখন নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। এই প্রথম ভারতকে ওয়ানডে ফরম্যাটে হারানোর স্বাদ পেল বাংলাদেশের মেয়েরা।

১৫৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতকে শুরুতেই চেপে ধরে বাংলাদেশের মেয়েরা। স্কোরবোর্ডে ১৩ রান তুলতেই স্মৃতি মানধানাকে বিদায় করেন মারুফা আক্তার। ১০ রান করে এই ওপেনার ফিরে যান মুর্শিদা খাতুনকে ক্যাচ দিয়ে।এরপর স্বস্তিকা ভাটিয়া ও প্রিয়া পুনিয়া মিলে আরও ১৭ রান যোগ করলেও দলীয় ৩০ রানে পুনিয়াকেও প্যাভিলিয়নের পথ দেখান মারুফা। এই ধাক্কা সামাল দিতে দিতে অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌরকে হারিয়ে বসে ভারত।

দলীয় ৩৭ এবং ব্যক্তিগত ৫ রানে নাহিদা আক্তারের বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন হরমনপ্রীত। একপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে যাওয়া স্বস্তিকাকে বিদায় করেন রাবেয়া খান। ৫০’র আগে ৪ ব্যাটার হারিয়ে বসা ভারত আরও বিপদে পড়ে জেমিমা রড্রিগেজের বিদায়ে। ৬১ রানে ৫ উইকেট হারানো ভারত তখনও জয় থেকে অনেক দূরে। সে সময় জুটি গড়েন দীপ্তি শর্মা ও আমানজত কৌর। তবে দলীয় রান ১০০’র ঘরে পৌছার আগে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মারুফা আক্তার। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ১৫ রানে ফেরেন মারুফা। পরের বলে স্নেহ রানার স্টাম্প ভেঙে দেন এই পেসার। ৭ উইকেট হারিয়ে বসা ভারত আরও বিপদে পড়ে পরের ওভারে। নাহিদা আক্তারের বলে দারুণ এক ক্যাচে দীপ্তিকে বিদায় করেন রিতু মনি।

৯১ রানে ৮ উইকেট হারানো সফরকারীদের সে সময় ১৫৪ রানের লক্ষ্য বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে হ্যাটট্রিক বলে অবশ্য সফল হননি মারুফা। নীচের দিকের ব্যাটাররা চেষ্টা চালিয়ে দলকে ১০০’র ওপর নিয়ে গেলেও সুলতানার শিকার হয়ে ফেরেন পুজা। শেষ ব্যাটার হিসেবে ডিরেক্ট থ্রোতে আনুশাকে রান আউট করে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সুলতানা। ৪০ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। ২৯ রানে ৪ উইকেট নেন মারুফা, ৩ উইকেট নেন রাবেয়া।

এদিন বৃষ্টিতে ৪৪ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ করে ১৫২ রান। বৃষ্টি আঈনে ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫৪ রান। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে বেশ ধীরগতির শুরু করেন উদ্বোধনী ব্যাটার শারমিন আক্তার সুপ্তা।

অন্যপ্রান্ত মুর্শিদা খাতুন রান করলেও ধুঁকছিলেন সুপ্তা। ১৮ বল খেলে কোনো রান করার আগেই আউট হন তিনি। রান আউট হয়ে মুর্শিদা খাতুনের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি। পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন মুর্শিদা। আমানজাতের বলে হারমানপ্রিত কৌরের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর বৃষ্টি নেমে আসে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে ১০৭ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হয়। ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে আসে ৪৪ ওভারে। এর মধ্যে ফারজানা হকের সঙ্গে ভালো জুটি গড়েছিলেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। ৫ চারে ৪৫ বলে ২৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন ফারজানা। তিনি আমানজাতের দ্বিতীয় শিকার হলে ভাঙে ৪৯ রানের জুটিটি।

পরের লড়াইটা জ্যোতির। তিনিও অবশ্য খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। ৩ চারে ৬৪ বলে ৩৯ রান করে জ্যোতি ফেরেন সাজঘরে। আমানজাতের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। শেষদিকে নেমে ২০ বল খেলে ১৬ রান করেন সুলতানা খাতুন। এছাড়া ২৯ বলে ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন ফাহিমা খাতুন। ১৫১ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.