চট্টগ্রামে ক্যাব চট্টগ্রাম ও ক্যাব যুব গ্রুপের উদ্যোগে “জীবন বাঁচাও, সিন্ডিকেট থামাও” শিরোনামে বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। শনিবার (১৫ জুলাই) বিকাল ৪ টায় নগরীর ২নং গেইট কর্নফুলী কমপ্লেক্স চত্বরে একর্মসূচির উদ্বোধন করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।
ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানে সঞ্চালনায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান, বিশিষ্ঠ নারী নেত্রী ও ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, ন্যাশনাল আওয়ামীলীগ (ন্যাপ)’র কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল দাস গুপ্ত, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব বায়েজিদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবম হুমায়ুন কবির, বায়েজিদ থানা মহিলা আওয়ামীলীগের নেত্রী জোহরা বেগম, সদরঘাট থানা থানা ক্যাবের সভাপতি শাহীন চৌধুরী, কিন্ডার গার্ডেন ঐক্য পরিষদের নেতা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান দুর্জয়, ক্যাব পাহাড়তলীর হারুন গফুর ভুইয়া, ক্যাব চান্দগাঁও এর আবদুর রহমান, এডাব’র চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমন্বয়কারী ফোরকান মাহমুদ, মানবাধিকার কর্মী লায়লা ইয়াছমিন, ক্যাব যুব গ্রুপের সিনিয়র সহসভাপতি নিলয় বর্মন, আইন সম্পাদক মিনা আকতার, সহ-সম্পাদক আমজাদুল হক আয়াজ, মোঃ খাইরুল ইসলাম, ফজলে রাব্বি তৌহিদ, পলি দাস, চিং মা মারমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বেশ কয়েক বছর আগে বন্যায় পেয়াঁজ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্থ হলে পেয়াঁজের দাম উর্ধ্বমূখি হয়েছিলো। ভারতীয় ক্রেতারা তখন পেয়াঁজ কেনা কমিয়ে দিয়েছিলো। পরবর্তীতে ব্যবসায়ীরা পেয়াঁজ বিক্রি করতে না পেরে বিপুল পরিমান পেয়াঁজ নষ্ঠ হয়ে পঁচে যায়। আমাদের দেশেও বছর দু’এক আগে অতি লাভের আশায় পেয়াঁজ মজুত করলে পরে বিক্রি করতে না পেরে পেয়াঁজ ব্যবসায়ীরা বিপুল লোকসান দেন। ঠিক একই ভাবে ছোলা আমদানি করে বেশি দামে বিক্রি করার জন্য ব্যবসায়ীরা ছোলা মজুত করলেও রমজানের মৌসুসে ছোলা বিক্রি করতে না পেরে লোকসান গুনতে হয়েছিলো। এবছর দেশীয় খামারী ঈদুল আজহায় বেশী দামের আশায় গরু বিক্রি না করে দাম ধরে রাখেন, পরবর্তীতে ক্রেতারা যখন বেশি দামে কেনা কমিয়ে দেন ফলে বিপুল পরিমান গরু অবিক্রিত থেকে যায়।
বক্তারা আরও বলেন, আবার দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন সত্তে¡ও কাঁচা মরিচ ইতিহাসের সবোর্”চ দামে কিনতে হয়েছে। সরকার দাম কমানোর জন্য ভারত থেকে কাঁচামারিচ আমদানির অনুমতি দিলে কয়দিন দাম কম ছিলো। চাহিদা বাড়তে থাকায় ব্যবসায়ীরা দাম আবার বাড়িয়ে দেন। এ অবস্থায় বাজারে সাধারন ক্রেতারা বাজার তদারকিতে সরকারের গাফলতিকে দায়ী করলেও ভোক্তা হিসাবে আমাদের কি কোন দায় দায়িত্ব নাই? ভোক্তা হিসাবে জাতিসংঘ স্বীকৃত ভোক্তা অধিকারগুলি যেরকম আমরা উপভোগ করবো ঠিক তেমনি আমাদের দায়িত্বগুলি সম্পর্কে আমাদের দায়িত্ববান হতে হবে। বিশেষ করে পণ্য বা সেবার মান ও গুনাগুন সম্পর্কে সচেতন ও জিজ্ঞাসু হওয়া; দরদাম যাচাই করে সঠিক পণ্যটি বাছাই করা; আপনার আচরণে অন্য ক্রেতা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হন সেব্যাপারে সচেতন থাকা; ক্রেতা-ভোক্তা হিসাবে অধিকার সংরক্ষণে সোচ্ছার ও সংগঠিত হওয়া।
তাই দাম বাড়লে হুড়াহুড়ি করে হুমড়ি খেয়ে না পড়ে খাদ্য-পণ্য ক্রয় না করা, মাসের বাজার একসাথে না কিনে সপ্তাহের বাজার করে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করা দরকার। বাজারে একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের বলে থাকেন একসাথে মাসের বাজার করেন, দাম রেড়ে যাবে? কিছু স্টক করে রাখেন ইত্যাদি করে সরবরাহ লাইনে সংকট তৈরী করে কিছু ব্যবসায়ী দাম বাড়ানোর সুযোগ নেন। তাই ব্যবসায়ীদের এই অপতৎপরতায় পা না দিয়ে মাসের বাজার এক সাথে না করে সপ্তাহের বাজার করা হলে ভোগ্য পণ্যের সরবরাহ লাইনে সংকট তৈরী হবে না। একই সাথে অতিমুনাফকারী, মজুতদার ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করা ও তাদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করার আহবান জানান। উল্লেখ্য চট্টগ্রাম মহানগরীর ২১টি বাজারে এধরনের প্রচারাভিযানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
অর্থসূচক/ এইচএআই
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.