‘বাজেটে ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির মত কিছু ভালো দিক থাকলেও বেশ কিছু নিয়ম ধনীদের সুবিধার্থে হয়েছে। কিন্তু অর্থনীতির অস্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে। বাজেটে রাজস্ব আয়ের যে উচ্চ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন করা সম্ভব হবে না।’
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ও নতুন আয়কর আইনের বিভিন্ন পর্যালোচনা বিষয়ক এক ওয়েবিনারে যুক্ত বক্তারা এমন মতবাদ প্রকাশ করেছেন।
এসময় আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, এনবিআরের কাস্টম ও ভ্যাট বিভাগের সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন ও এনবিআরের আয়কর বিভাগের সাবেক সদস্য অপূর্ব কান্তি দাস। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিএবির সভাপতি মনিরুজ্জামান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিএবির সদস্য স্নেহাশিষ বড়ুয়া, এফসিএ, এমবিএম লুৎফুল হাদি, এফসিএ এবং রাকেশ সাহা, এফসিএ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটে ধনীদের সারচার্জমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে চার কোটি টাকা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গরিবকে আরও গরিব, আর ধনীকে আরও ধনী বানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে হলে কর ফাঁকি বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি কর অব্যাহতি সুবিধা কমাতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে আইসিএবি সভাপতি মনিরুজ্জামান বলেন, প্রস্তাবিত আয়কর আইনটি অনেক দিক থেকে বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব হয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে বাস্তববাদী হতে হবে। তা না হলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে।
আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে হলে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে হবে। সরকার ইতিমধ্যে প্রত্যক্ষ কর বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। এটাকে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এছড়াও, এনবিআরের আয়কর বিভাগের সাবেক সদস্য অপূর্ব কান্তি দাস বলেন, উন্নত দেশগুলোতে ৭০ শতাংশ কর আসে প্রত্যক্ষ কর থেকে। আমাদের দেশে এটি অনেক কম। নতুন আয়কর আইনে অনেক বিষয় সহজ করা হয়েছে। কিন্তু এনবিআরকে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করা না গেলে এগুলোর বাস্তবায়ন ঠিকভাবে হবে না।
এনবিআরের কাস্টম ও ভ্যাট বিভাগের সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, রিজার্ভ–সংকট, ডলার–সংকট, মূল্যস্ফীতিসহ এ বছর আমাদের অর্থনীতির জন্য একটা অস্বাভাবিক বছর যাচ্ছে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই বাজেট করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাজেটে কাস্টমস ও ভ্যাট নিয়ে মৌলিক কোনো পরিবর্তন আমরা দেখিনি।
অর্থসূচক/এমআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.