সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের সময় আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে আনা নির্যাতনসহ অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ পরীক্ষা করে দেখতে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত আইসিজেতে যৌথভাবে একটি আবেদন দাখিল করেছে নেদারল্যান্ডস ও কানাডা৷ গৃহযুদ্ধের সময় সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টিও আবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের ঐ আদালতে করা আবেদনে দেশ দুটি বলেছে, ‘সাধারণ নাগরিকদের বিক্ষোভে সহিংস নিপীড়ন চালিয়ে সিরিয়া অনেকভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে৷’ এর মধ্যে রয়েছে বন্দিদের সাথে ঘৃণ্য আচরণ, আটক রাখার জায়গার অমানবিক পরিস্থিতি, গুম, যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ব্যবহার এবং শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা৷
অবিলম্বে এসব নিপীড়ন বন্ধ করতে সিরিয়াকে বাধ্য করতে আইসিজেকে জরুরি ভিত্তিতে একটি নির্দেশ ইস্যু করতেও অনুরোধ করেছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস৷ গৃহযুদ্ধের সময় সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টিও আবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ডাচ সরকারের অবস্থান হলো- সিরিয়ার সাধারণ নাগরিকদের মানবাধিকার যে সে দেশের সরকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করেছে তার যথেষ্ট প্রমাণ আছে৷’
এমন সময়ে দুই দেশ সিরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলো যখন আসাদ সরকারের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে আরব লিগ৷ পশ্চিমা কয়েকটি দেশ গত কয়েক বছর ধরে সিরিয়ার যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস করানোর চেষ্টা করছে৷ এছাড়া হেগে অবস্থিত আরেকটি আদালত ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে’ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিচার করানোরও চেষ্টা করেছে কয়েকটি দেশ৷ কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়ার কারণে সেসব সম্ভব হয়নি৷
তাই ২০২০ সালে বিকল্প উপায় খোঁজা শুরু করে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস৷ তারা মনে করছে, দুটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে তিনটি দেশই (সিরিয়া, ক্যানাডা ও নেদারল্যান্ডস) সই করায় সিরিয়ার বিচার করার ক্ষমতা আইসিজের রয়েছে৷
এদিকে ‘ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন’ ক্ষমতা প্রয়োগ করে জার্মানিসহ কয়েকটি দেশেও সিরিয়ার যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে মামলা চলছে৷ তবে এখন পর্যন্ত সিরিয়ার মাত্র একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷ ২০২১ সালে জার্মানির একটি আদালত সিরিয়ার সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন৷ এছাড়া সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর হয়ে লড়াই করা এক ফিলিস্তিনিকেও অভিযুক্ত করেছে জার্মানির একটি আদালত৷ তাকে সর্বনিম্ন ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, রয়টার্স
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.