রোহিঙ্গাদের সাড়ে ৪ মিলিয়ন ডলার খাদ্যসহায়তা দেবে জাপান

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অব্যাহত সহযোগিতার অংশ হিসেবে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা দেওয়া ঘোষণা দিয়েছে জাপান। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) মাধ্যমে ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি ইওয়ামা।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত এবং ডব্লিউএফপির আবাসিক প্রতিনিধি ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কাল্পেলি এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, এই বছরের মার্চ মাসে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের জরুরি খাদ্য সহায়তা দিয়েছিলাম। এরপর আমরা ডব্লিউএফপির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষাকারী খাদ্য সহায়তায় ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত। আমরা আশা করি এই অনুদান শিবিরে তীব্র খাদ্য সংকট দূর করতে সাহায্য করবে। জাপান মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন সহ একটি টেকসই বন্দোবস্তের কাজ চালিয়ে যাবে। এছাড়া শরণার্থী ও স্বাগতিক সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য ডব্লিউএফপিসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে সহযোগিতা করবে জাপান।

জীবিকার সুযোগ না থাকায় রোহিঙ্গারা তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে সম্পূর্ণভাবে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে। তহবিলের অভাবের কারণে গত মার্চ মাসে কক্সবাজার ক্যাম্পে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ডব্লিউএফপির খাদ্য সহায়তা প্রতি মাসে ১২ মার্কিন ডলার থেকে ১০ ডলারে কমিয়ে আনা হয়। তারপর জুন মাসে বরাদ্দ ৮ ডলারে কমিয়ে আনতে হয়েছিল। কম খাবার পাওয়ায় পরিবারগুলোকে চাহিদা মেটানোর জন্য পছন্দের খাবার রেখে দেওয়া হয়। যার কারণে তাদের সহিংসতা, শোষণ এবং মানব পাচারের জন্য আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে বলে ডব্লিউএফপির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতিমধ্যে ১০টির মধ্যে চারটি পরিবার পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করছে না। এছাড়া ১২ শতাংশ শিশু তীব্রভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে। বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সমস্ত শিবির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তখন বাঁশ ও তেরপলি দিয়ে তৈরি ৪০ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে খাদ্যের মজুদ পুনরায় পূরণ করা জরুরি।

ডব্লিউএফপির আবাসিক প্রতিনিধি ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কাল্পেলি বলেন, যে সময়ে আমরা রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর জন্য খাদ্য রেশন কমাতে বাধ্য হয়েছি, তখন জাপানের এই অনুদান খুবই সময়োপযোগী। আমরা আশা করি আরও দাতারা এগিয়ে আসবেন এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশাকে তাদের সাহায্য এজেন্ডা তালিকার শীর্ষে রাখবেন। আমরা সম্পূর্ণ রেশন পুনরুদ্ধারের জন্য ৪৮ মিলিয়ন ডলারের আবেদন করছি। প্রতিটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে ১২ ডলারের কম অর্থে সম্ভব না। এর ফলে শুধুমাত্র নারী ও শিশুদের পুষ্টির ওপরই নয়, ক্যাম্পে থাকা প্রত্যেকের জন্য সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তার ওপরও মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে।

অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.