বাঁধ ভাঙা নিয়ে একে অপরকে দুষছে কিয়েভ-মস্কো

বিস্ফোরণে দক্ষিণ ইউক্রেনের কাখোভকা বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যাপক ক্ষতি। এদিকে ভাঙা বাঁধ দিয়ে প্রবল গতিতে বেরোচ্ছে নিপ্রো নদীর পানি। বাঁধ ভাঙার ফলে প্রচুর দ্বীপ প্লাবিত হয়েছে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৮০টি জনবসতি এলাকা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব জলবিদ্যুৎ সংস্থা জানিয়েছে, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণের ফলে পুরো কেন্দ্রটি ধ্বংস হয়ে গেছে। বাঁধটি আংশিকভাবে ভেঙে গেছে। এর ফলে বহু এলাকা পানির তলায় চলে গেছে।

মস্কো ও কিয়েভ একে অপরকে এর জন্য দায়ী করেছে। ইউক্রেন বলেছে, তাদের সেনা যাতে দক্ষিণ ইউক্রেন যেতে না পারে, সেজন্যই রাশিয়া এই কাজ করেছে। আর মস্কোর অভিযোগ, ইউক্রেনের বাহিনী গোলা মেরে এই কাজ করেছে।

এই বাঁধ তৈরি হয়েছিল সোভিয়েত জমানায়। এখান থেকে ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে জল সরবরাহ করা হত। একইসঙ্গে ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলেও জল যেত। এই অঞ্চল ২০১৪ সালে রাশিয়া দখল করে নিয়েছে। এই বাঁধের পাশের এলাকাও রাশিয়ার দখলে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, গত কয়েক দশকের মধ্যে ইউরোপে এটাই সবচেয়ে বড় পরিবেশগত বিপর্যয় এবং যার পিছনে মানুষই দায়ী। তার যুক্তি এই শক্তপোক্ত বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সাধারণ কারণে ভেঙে পড়া সম্ভব নয়। রাশিয়াই তা ভেঙেছে।

শহরে জল ঢুকে পড়েছে। তার মধ্যেই সাইকেল চালিয়ে নিরাপদ জায়গায় যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। শহরে জল ঢুকে পড়েছে। তার মধ্যেই সাইকেল চালিয়ে নিরাপদ জায়গায় যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তারা বাঁধ ভাঙা নিয়ে রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে। মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েছেন, এই আক্রমণের পিছনে মস্কো আছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বাঁধ ভাঙার ফলে প্রচুর মানুষ মারা গেছেন। আমরা এই রিপোর্ট দেখেছি যে, বাঁধে বিস্ফোরণের জন্য রাশিয়া দায়ী। আমরা সব রিপোর্ট খতিয়ে দেখছি। ইউক্রেন যাতে আরো তথ্য দেয়, তার জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। কী হয়েছিল, তা আমরা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। এই বিস্ফোরণ ইচ্ছে করে করা হয়েছে কি না, তাও জানাতে পারেননি কিরবি।

নোভা কাখোভকা এলাকার এক চিড়িয়াখানার মালিক জানিয়েছেন, তার আশঙ্কা অন্ততপক্ষে তিনশ পশু মারা গেছে। এই এলাকাটি রাশিয়ার সেনার অধিকারে আছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির অনুরোধ মেনে আমেরিকা যদি ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করে তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। এফ১৬-র কিছু বিমান পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে। যদি তারা এটা বুঝতে না পারে, তাহলে তাদের সামরিক কৌশল খুবই খারাপ।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‘ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান দেয়ার উদ্দেশ্য, তারা যাতে ঠিকভাবে আত্মরক্ষা করতে পারে, তাদের বায়ুসীমা রক্ষা করতে পারে এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করতে পারে। যদি ইউক্রেনের সামরিক শক্তি নিয়ে রাশিয়া চিন্তিত, তাহলে তারা অবিলম্বে সেখান থেকে সেনা সরাক।’

ইউক্রেনের পাইলটদের এফ১৬ চালাবার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তবে ইউক্রেনকে এখনো এই যুদ্ধবিমান দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র: ডিডাব্লিউ, এপি, এএফপি, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.