অধিকাংশ ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানি কারকেরা ব্যাংকের মালিক: বারভিডা

যারা ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানি করে তাদের অধিকাংশই ব্যাংকের মালিক। তারা ডলার সংকটের সময়ও দেশে ব্রান্ড নিউ গাড়ি আমদানি করছে। কিন্তু রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি করা কেউই ব্যাংকের মালিক নয়। এ কারণে এলসি খুলতে সমস্যা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন ভেহিক্যালস ইমপোর্টস অ্যান্ড ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) প্রেসিডেন্ট মো. হাবিব উল্লাহ ডন।

মঙ্গলবার (৬ জুন) বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বারভিডা।

বারভিডা প্রেসিডেন্ট বলেন, সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়ন এবং প্রধানমন্ত্রীর ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গাড়ির বাজার সম্প্রসারণ প্রয়োজন। গত এক বছরে বিশ্বব্যাপী মার্কিন ডলারের সংকটের ফলে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। এতে গাড়ির দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক কমানো এবং মাইক্রোবাস ও বৈদ্যুতিক গাড়ির সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা দরকার।

হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক কমানো এবং মাইক্রোবাস ও বৈদ্যুতিক গাড়ির সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করলে গাড়ির দাম মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে। এর ফলে বাজার সম্প্রসারণের সাথে সাথে সরকারের রাজস্ব আয়ও বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, এনবিআরের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় আমরা ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির গাড়ির শুল্ক-কর পুনর্বিন্যাসের লক্ষ্যে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছিলাম। হাইব্রিড প্রযুক্তির মোটরগাড়িতে সিসি ভিত্তিক শুল্ক-করের হার বিদ্যমান রয়েছে। উৎপাদক এবং ব্যবহারকারী অন্য দেশগুলোর সাথে মিল রেখে সিসি স্ল্যাবের সংস্কার এবং পরিবর্তন দরকার। আমরা বাজেট প্রস্তাবনায় তাই জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব হাইব্রিড গাড়ির সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্ক হার পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করেছিলাম। যাতে এসব গাড়ি আমদানি সহজলভ্য হয় এবং  দেশের ভোক্তাশ্রেণী উপকৃত হবে। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে হাইব্রিড কার ও জিপ (১৮০১ সিসি থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত) আমদানিতে শুল্ক হ্রাস না করায় আমাদের খাতের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করে তা বাজেটে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।

এছাড়া দেশের ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিনিয়োগ সম্প্রসারণের কারণে আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠা শিল্প কারখানাগুলোকে যাতায়াতের নিরাপদ বাহন হিসেবে ব্যবহার করা জীপ গাড়ির সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেছিলাম। আমাদের প্রস্তাব অনুযায়ী সিসি স্ল্যাব ও সম্পুরক শুল্ক কমানো হলে এসব গাড়ি আমদানি বৃদ্ধি এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, জ্বালানি ও বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে আমরা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জপূর্ণ সময় পার করছি। এমন পরিস্থিতিতে দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির আমদানি ও ব্যবহার বৃদ্ধি আমাদেরকে বড় রকমের স্বস্তি দিতে পারে। আমরা তাই বৈদ্যুতিক গাড়ির বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছিলাম।

জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, চীন, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি ও ব্যবহারে ব্যাপক প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মোটরযানে ফসিল ফুয়েলের ব্যবহার কমে আসায় বাংলাদেশেও বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায়, পরিবেশ সুরক্ষা এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি উৎসাহিত করতে এসব গাড়িকে সব ধরনের শুল্ক-কর হতে অব্যাহতি দেয়া জরুরি বলে মনে করছেন বারভিডা প্রেসিডেন্ট।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.