যেসব বিশ্ব নেতারা এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানালেন

তৃতীয়বারের জন্য জয়ী হলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। বিরোধী প্রার্থী কেমাল কুলুচদারুলুর চেয়ে কয়েক শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি। জেতার জন্য তার প্রয়োজন ছিল ৫০ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় দফার ভোটে এরদোয়ান পেয়েছেন ৫২ দশমিক ১৪ শতাংশ ভোট। এর আগে প্রথম দফার ভোটে তিনি ৪৯ শতাংশ ভোট পাওয়ায় দ্বিতীয় দফার ভোটের আয়োজন হয়। কারণ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হতে হলে ৫০ শতাংশ ভোট পেতেই হবে।

এদিকে এরদোয়ানের জয় ঘোষণা হওয়ার পরেই অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেন টুইটে লিখেছেন, ন্যাটোর পার্টনার হিসেবে এরদোয়ানকে তিনি অভিনন্দন জানাচ্ছেন। বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্য এরদোয়ানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রায় কাছাকাছি সময়েই এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি লিখেছেন, এরদোয়ানের জয় অবশ্যম্ভাবী ছিল। কারণ, তুরস্ককে এতদিন ধরে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি রাশিয়ার বন্ধু হিসেবেও এরদোয়ানের তুরস্ককে চিহ্নিত করেছেন পুতিন। ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরো গাঢ় হবে, এমন আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমিরি জেলেনস্কি টুইট করে জানিয়েছেন, তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক আরো গভীর করার লক্ষেই এগোবে ইউক্রেন। এরদোয়ানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা হবে।

বস্তুত, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে খাদ্যশস্যের চুক্তি তুরস্কের মধ্যস্থতাতেই হয়েছে। এর ফলে কৃষ্ণসাগর দিয়ে খাদ্যসামগ্রী বিশ্বের অন্যত্র পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা তুরস্কে বৈঠক করেছিলেন শান্তির লক্ষ্যে। যদিও তা সফল হয়নি।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎস টুইট করে তাকে অভিনন্দন জানান। তিনি জানিয়েছে, ‘একসঙ্গে আরো অনেক কাজ করতে হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরো মজবুত করতে হবে।’

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর তরফেও এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। দুই সংগঠনই জানিয়েছে, তুরস্কের কাছে তারা আরো বড় ভূমিকা আশা করে। তারা চায়, এরদোয়ান আরো বেশি সহায়ক শক্তি হয়ে উঠুন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘তুরস্কের মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন তিনি। ’

সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, দেশটির বাদশাহ সালমান এরদোয়ানকে তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এরদোয়ানের জয়কে তুরস্কের বিজয় বলে আখ্যা দিয়েছেন লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ।

শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি। পাশাপাশি তিনি তুরস্কের সঙ্গে কাতারের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদারের ইচ্ছে পোষণ করেছেন।

এরদোয়ানের বিজয়কে অবিসংবাদিত উল্লেখ করে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর ওরবান।

এরদোয়ানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। লুলা লিখেছেন, ‘শান্তি, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং বিশ্বের উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতায় ব্রাজিলের অংশীদারিত্বের উপর নির্ভর করতে পারেন এরদোয়ান। ’

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘ফ্রান্স ও তুরস্ক এগিয়ে যেতে থাকবে। ’

সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন টুইটারের মাধ্যমে এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, ‘দুই দেশের নিরাপত্তার বিষয়টি ভবিষ্যতে অগ্রাধিকার পাবে। ’

এ ছাড়া ফিলিস্তিন, আজারবাইজান ও সার্বিয়ার রাষ্ট্র নেতারাও এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনীতিতে এরদোয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। একদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধ থামাতে তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। কারণ, রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই পক্ষের সঙ্গেই তুরস্কের যোগাযোগ আছে। অন্যদিকে, সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদান নিয়ে তুরস্কই শেষ বক্তব্য রাখবে। তাদের ভেটোতেই বিষয়টি আটকে আছে। ফলে সবপক্ষের কাছেই ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে এরদোয়ানের গুরুত্ব অনেকটা। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.