ডোহানিকে ফেরালেন মুস্তাফিজ

নাজমুল হোসেন শান্ত, তামিম ইকবাল, লিটন দাসরা থিতু হয়েছিলেন, তবে তামিম ছাড়া আর কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। শেষ দিকে অবশ্য হাল ধরেছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে মুশফিকুরের বিদায়ের পর ধস নামে বাংলাদেশের। মিরাজ, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি, মুস্তাফিজুর রহমানরা দ্রুতই ফিরলে মাত্র ১৩ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় সফরকারীরা। তাতে ভালো শুরুর পরও ২৭৪ রানে থামতে হলো তামিমের দলকে।

মাঝারি লক্ষ্যে খেলতে নামা আয়ারল্যান্ড ইনিংসের শুরু থেকেই রান তুললে হাঁসফাঁস করেছে। তবে উইকেটের দেখা পেতে ইনিংসের ষষ্ঠ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। মুস্তাফিজুর রহমানের ফুল লেন্থের ডেলিভারিতে স্টিফেন ডোহানি উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন।

এর আগে দিনের শুরুতে চেমসফোর্ডে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। বৃষ্টির কারণে প্রথম ম্যাচের কোনো ফলাফল না এলেও দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজে এগিয়ে রয়েছে টাইগাররা। অবশ্য শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরানোর সুযোগ রয়েছে আইরিশদের। এই ম্যাচে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি। সিরিজ নির্ধারণী এই ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হচ্ছে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি ও রনি তালুকদারের। অনুমেয়ভাবেই উইকেট থেকে বাড়তি সুইং পেয়েছেন জশুয়া লিটল-মার্ক অ্যাডায়ার। পেসারদের সুইং সামলাতে গিয়ে বেগ পেতে হচ্ছিলো রনি তালুকদারকে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে অ্যাডায়ারের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে চার মেরে ১৩তম বলে রানের খাতা খোলেন ডানহাতি এই ওপেনার। তবে চার মারার পরের বলেই ফিরে যেতে হয় তাকে। অ্যাডায়ারের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারি তাড়া করতে গিয়ে উইকেটকিপার লরকান টাকারকে ক্যাচ দেন ১৪ বলে ৪ রান করা রনি।

ডানহাতি এই ওপেনার দ্রুত ফিরলেও রানের চাকা সচল রাখেন তামিম ও শান্ত। তাদের দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৬২ রান তোলে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে শেষ হতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আগের দুই বল লেংথে করলেও তৃতীয় বলে সেটা খানিকটা কমিয়ে আনলেন ক্রেইগ ইয়াং, তাতেই আউট সাইড এজ হলেন শান্ত। স্লিপে দাঁড়িয়ে বালবির্নি নিচু হওয়া ক্যাচ লুফে নিলে ফিরে যেতে হয় তাকে। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শান্ত এদিন আউট হয়েছেন ৩৫ রানে।

শান্ত ফেরার পর তামিম-লিটন জুটির পঞ্চাশ হওয়ার পরই আউট হয়েছেন লিটন দাস। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের পঞ্চম স্টাম্পের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পেছনের পায়ের উপর ভরে খানিকটা জায়গা নিয়ে মিড অফের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন লিটন। তবে ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক টাইমিং না হওয়ায় অ্যাডায়ারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় ৩৫ রান করা এই ব্যাটারকে।

এদিকে লম্বা সময় ধরেই ব্যাট হাতে রান পাচ্ছিলেন না তামিম ইকবাল। এদিনও শুরুতেই ফিরতে পারতেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তবে স্লিপে দাঁড়িয়ে বালবির্নি ক্যাচ ছাড়লে জীবন পা বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। জীবন পেয়ে সেটা ঠিকঠাক কাজেও লাগিয়েছেন তিনি। জশুয়া লিটলের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে থার্ডম্যান দিয়ে চার মেরে ৬১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তামিম। সবশেষ হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০২২ সালের ৭ আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।ইনিংসের হিসেবে যা ১০ আর সময়ের ব্যবধান ৯ মাস। তামিমের হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ওভারে আউট হয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। জর্জ ডকরেলের লেংথ ডেলিভারিতে খানিকটা পেছনে সরিয়ে গিয়ে কাট করতে চেয়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ব্যাটে-বলে করতে না পারায় বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাকে। অথচ বলটি সামনের পায়ের ওপর ভর দিয়ে খেলতে পারতেন ১৩ রান করা হৃদয়।

তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে বাংলাদেশকে টেনেছেন তামিম ইকবাল। লম্বা সময় পর হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া এই ব্যাটার শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ৬৯ রানের ইনিংস খেলে। ডকরেলের লেংথ ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন তামিম। তবে শটে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় শর্ট থার্ডম্যানে থাকা ইয়াংকে ক্যাচ দেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। তামিম ফেরার পর মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে টানছিলেন মুশফিকুর রহিম। দারুণ এক জুটিও গড়েন তারা দুজন। মুশফিক ও মিরাজের জুটি ভাঙেন ম্যাকব্রাইন। ডানহাতি এই স্পিনারের বল স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন তিনি। রিভিউ নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি ৪৫ রান করা মুশফিকের।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.