মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সেনারা গত বুধবার বাগো অঞ্চলের হতানতাবিন টাউনশিপে পাঁচ শিশুসহ ১৮ জন গ্রামবাসীকে হত্যা ও পুড়িয়ে দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে দু’জন পাঁচ বছর বয়সী, একজন সাত বছর বয়সী, নয় বছর বয়সী, ১৫ বছর বয়সীসহ সত্তরোর্ধ্ব পুরুষ ও নারীও রয়েছে। শনিবার (১৩ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী।
দ্য ইরাবতী বলছে, মিয়ানমার সেনারা মূলত প্রতিশোধমূলক আক্রমণ চালয়েছে। ওই গ্রামের কাছাকাছি প্রতিরোধ গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের সশস্ত্র শাখা কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির আক্রমণে জান্তা সেনারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে সেই ক্ষোভে বুধবার এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। হামলার পর মিয়ানমারের সৈন্যরা নিয়াং পিন থার গ্রামে অভিযান চালায় এবং বাসিন্দাদের মতে, এসময় যাকেই সামনে পাওয়া গিয়েছিল তার ওপরই নির্যাতন করে সেনারা।
হতানতাবিন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এটি ফ্যাসিবাদী সামরিক বাহিনীর অন্যতম অমানবিক কাজ।’
এক গ্রামবাসী দ্য ইরাবতীকে জানান, সে তার বোন, শ্যালিকা এবং ভাতিজিকে সেই হত্যাকান্ডে হারিয়েছে। সৈন্যরা তাদের হত্যা করেছে। ইউ কিয়াও থেইন (৫৫) নামে তার এক প্রতিবেশী জান্তা সেনাদের হামলায় নিহত হয়েছেন। তিনি আক্রমণের শিকার হননি কারণ ঘটনার সময় তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
ওই নারী বলেন, ‘ইউ কিয়াও থেইন শুনতে পায় সৈন্যরা তার মাকে নিয়ে যাচ্ছে। এসময় মাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করে জানান, তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত এবং তাদের সাথে যেতে পারছেন না। আর তাই তারা তার মায়ের পরিবর্তে ইউ কিয়াও থেইনকে নিয়ে যায়। নিহত ১৮ জনের মধ্যে তিনিও রয়েছেন।’
গ্রামবাসীরা জানান, আটক কয়েকজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। গনমাধ্যমের স্বাধীনভাবে এসব তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে হামলার পর ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে পোড়া দেহাবশেষসহ মৃতদেহ দেখা গেছে বলে জানিয়েছে দ্য ইরাবতী।
মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাজনীতিবিদদের প্রতিষ্ঠিত নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত মিয়ানমারজুড়ে জান্তা সেনাদের ৬৪টি গণহত্যার ঘটনা রেকর্ড করেছে। আর এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৬৬ জন।
অর্থসূচক/ এইচএআই



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.