চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সঞ্চয়পত্র থেকে কোন ঋণ নেয়নি সরকার। উল্টো ৪ হাজার ১৬১ কোটি টাকারও বেশি পরিশোধ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬২ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে সরকার। আর এই খাতের মোট পরিশোধ করেছে ৬৬ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ নয় মাসে ৪ হাজার ১৬১ কোটি টাকা অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হয়েছে সরকারকে।
এদিকে গত মার্চ মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকার। তবে মূল ও মুনাফা বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে ৭ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। সুতরাং বিক্রির চেয়ে পরিশোধের পরিমাণ ৬৫২ কোটি টাকা বেশি। অথচ ২০২২ সালের মার্চেও নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা।
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ব্যয় মেটাতে এবার ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়া বাড়িয়েছে সরকার। এরই মধ্যে সাড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে ফেলেছে। এর বেশিরভাগই নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সরকারকে এই টাকার জোগান দিচ্ছে। এরফলে মূল্যস্ফীতির ওপরও চাপ বেড়েছে ব্যাপকহারে।
তথ্য বলছে, গত সেপ্টেম্বর থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে বেশি ভাঙানো হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে নিট বিক্রির পরিমাণ ঋণাত্মক ছিলো ৩ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। এছাড়া জানুয়ারিতে ৩ হাজার ৬৯ কোটি, ডিসেম্বরে প্রায় ১ হাজার ৪৯১ কোটি, নভেম্বরে ৯৭৮ কোটি ৩৯ লাখ, অক্টোবরে ৯৬৩ কোটি ১৬ লাখ ও সেপ্টেম্বরে প্রায় ৭৩ কোটি টাকা ঋণাত্মক ধারায় ছিল। যদিও অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগের পরিমাণ কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ছিল। এর মধ্যে গত আগস্টে সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল আট কোটি টাকা। আর জুলাইয়ে ছিল ৩৯৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরেও সঞ্চয়পত্র থেকে তুলনামূলক কম ঋণ পেয়েছিল সরকার।
পুরো অর্থবছরে ৩২ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নিট ঋণ আসে ১৯ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা। অথচ করোনার পরও ২০২০-২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগ হয়েছিল প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এটি তার আগের অর্থবছরে ছিল মাত্র ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা।
অর্থসূচক/এমএইচ



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.