তাইওয়ানের পাশ থেকে যুদ্ধবিমান ও রণতরি সরায়নি চীন

তাইওয়ানকে ঘিরে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধ আরো প্রকট হয়ে উঠছে৷তিন দিনের ঘোষিত সামরিক মহড়ার পরেও তাইওয়ানের আশেপাশে চীনা যুদ্ধবিমান ও রণতরি সরে যায়নি৷ সোমবার রাতে মহড়ার সমাপ্তির ঘোষণা করলেও তাইওয়ান দাবি করছে, যে নয়টি চীনা রণতরি ও ২৬টি যুদ্ধবিমান এখনো সেই অঞ্চলে টহল দিচ্ছে৷ বার বার সামরিক মহড়ার নিন্দা করলেও তাইওয়ান উত্তেজনা আরও না বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছে৷ মহড়ার সময়ে ৯১টি চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আশেপাশে উড়ে গেছে বলে তাইওয়ানের সরকারি সংবাদ সংস্থা দাবি করেছে৷

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন শনিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে ফেরার পরেই চীন সামরিক মহড়া শুরু করে৷ সাই লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষের স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ চীন আগেই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের আমেরিকা সফর ও স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিল৷ ফেসবুকের এর পোস্টে সাই লিখেছেন, যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি বিশ্বের কাছে তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন৷ ফলে তাঁর বিদেশ সফর নতুন কিছু নয়৷ অ্যামেরিকা সফরও ব্যতিক্রম নয়৷ তাইওয়ানের জনগণ এমনটাই প্রত্যাশা করে বলে তিনি মনে করেন৷ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে চীনের এমন মনোভাব মোটেই দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দিচ্ছে না বলে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট মন্তব্য করেন৷

চীনের সর্বশেষ সামরিক মহড়া জাপানেও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে৷ বিশেষ করে সে দেশের দক্ষিণের দ্বীপগুলি তাইওয়ানের কাছে থাকায় সম্ভাব্য সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে৷ ওকিনাওয়া দ্বীপে মার্কিন বিমানবাহিনীর বিশাল ঘাঁটি রয়েছে৷ গত বছর আগস্ট মাসে তৎকালীন মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের সময় চীন যে সামরিক মহড়া চালিয়েছিল, সে সময়ে চীনা ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকার গণ্ডির মধ্যে পড়ে৷

মার্কিন প্রশাসনও তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের কড়া মনোভাবের প্রেক্ষাপটে হাত গুটিয়ে বসে নেই৷ মঙ্গলবার সে দেশ ফিলিপাইন্সের সঙ্গে সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে৷ প্রায় ১৮ হাজার সৈন্য বাৎসরিক এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে৷ অস্ট্রেলিয়ার ১০০ সৈন্যও তাতে যোগ দিচ্ছে৷ এর আওতায় এই প্রথম দক্ষিণ চীন সাগরেও ‘লাইভ ফায়ার ড্রিল’ চালানো হচ্ছে৷ তাইওয়ান থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে ফিলিপাইন্সেল লুজোন দ্বীপেও হেলিকপ্টার দিয়ে মহড়া চালানো হচ্ছে৷ সে দেশের প্রেসিডেন্ট হবার পর ফার্দিনান্দ মার্কোস অ্যামেরিকার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার যে অঙ্গীকার করেছিলেন, তার আওতায় এমন মহড়া বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ গত কয়েক মাসে দুই দেশ আবার যৌথভাবে দক্ষিণ চীন সাগরে টহলেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ফিলিপাইন্সে অ্যামেরিকার স্থায়ী সামরিক উপস্থিতিও বাড়ানো হচ্ছে৷ চীন এমন সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এএফপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.